করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি মাদারীপুরে বন্ধ রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ২৫ মার্চ ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে মাদারীপুর শহর, সদর উপজেলা, শিবচর, রাজৈর ও কালকিনি উপজেলার সকল ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। একই সাথে মাদারীপুরের সাথে আশপাশের জেলা ও উপজেলার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাদাৎ হোসেন স্বপ্রণোদিত হয়ে তার ইউনিয়নের সকল দোকান, যানবাহন চলাচলসহ বন্ধসহ সকল মানুষকে ঘরের ভিতরে থাকার জন্য এবং অন্য কোন এলাকা থেকে যাতে কোন লোক প্রবেশ করতে না পারে সে ঘোষনা দিয়েছেন। এ জন্য তিনি ইউনিয়নের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন।
বুধবার বিকেল পর্যন্ত মাদারীপুরে হোম কোয়ারেন্টিনে ৩২৩ জন এবং হাসপাতালের কোয়ারেন্টিনে আছে ৩ জন। সদর হাসপাতালের আইসলেশনে আছে ৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে হোম কোয়ারেন্টিনে আছে ২৫ জন। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিন থেকে রিলিজ পেয়েছেন ৩৪১ জন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন অফিস।
মাদারীপুর শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বুধবার সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের মত বন্ধ রয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া কোন মানুষকেই ঘর থেকে বের হতে দেখা যায়নি। বন্ধ রয়েছে শহরের সকল প্রাইভেট হাসপাতাল। জেলা পুলিশের একাধিক টিমকে রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে। মাদারীপুরের সাথে আশপাশের জেলা ও উপজেলার সকল বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শিবচরের ৪টি এলাকা ষষ্ঠ দিনের মতো অবরুদ্ধ রয়েছে। অবরুদ্ধ এলাকাগুলো হলো শিবচর পৌরসভার ২টি ওয়ার্ড, পাঁচ্চর ইউনিয়নের একটি গ্রাম ও দক্ষিন বহেরাতলা ইউনিয়নের একটি গ্রাম। বুধবার সকাল থেকে তৃতীয় দিনের মত এসব গ্রামের হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকা পরিবার ও নি¤œ আয়ের মানুষের বাড়িতে প্রত্যেক পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, পেয়াজ, লবণ, সাবান ও ঔষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করেছে শিবচর উপজেলা প্রশাসন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে তৃতীয় দিনের মত কালকিনি উপজেলার প্রায় সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শুধু নিত্য প্রয়োজনীয় ও ঔষুধের দোকান খোলা রয়েছে। এছাড়াও করোনাভাইরাস সংক্রমন এড়াতে মাদারীপুরের সঙ্গে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সকল সিমান্তবর্ত্তী সংযোগ সড়ক সাময়িক বন্ধ রয়েছে।
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরসহ বিভিন্ন হাটবাজারের বেশির ভাগ দোকান বুধবার সকাল থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এদিকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাদাৎ হোসেন স্বপ্রণোদিত হয়ে তার ইউনিয়নের সকল দোকান, যানবাহন চলাচলসহ বন্ধসহ সকল মানুষকে ঘরের ভিতরে থাকার জন্য এবং অন্যকোন এলাকা থেকে যাতে কোন লোক প্রবেশ করতে না পারে সে ঘোষনা দিয়েছেন। এ জন্য তিনি ইউনিয়নের সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন।
পাইকপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাদাৎ হোসেন বলেন, প্রায় ১৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ ইউনিয়নে প্রায় ত্রিশ হাজার লোক বসবাস করে এবং প্রায় ৩০০ জন প্রবাসী রয়েছে । এদের মধ্যে ১২ জন প্রবাসী সদ্য দেশে ফিরে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে। আমার ইউনিয়নের জনগনকে সুরক্ষা দিতেই এব্যবস্থা গ্রহন করেছি। বিভিন্ন রাস্তার পাশে ও প্রবেশদ্বারে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহানা নাসরিন জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি।
জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, জেলার সকল বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। শহরের লেকেরপাড়ে জনসমাগম না করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে মানুষের সচেতন হওয়া খুব জরুরী। আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে মানুষকে সচেতন করার জন্য। বিশেষ করে যারা বিদেশ ফেরত তাদেরকে অবশ্যই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। প্রবাসীরা ঘরের বাহিরে ঘোরাফেরা বা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারবে না। সরকারি নির্দেশনা সকলকে মেনে চলতে হবে।