উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন
ঢাকা, ০২ জুন, ২০২৫ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অর্থ বিল অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।’
জুলাইয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। অবসান হয় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের। গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ গ্রহণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের এটি প্রথম বাজেট। বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হবে ভিন্ন আঙ্গিকে। সংসদ না থাকায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট এবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জাতির উদ্দেশ্যে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করবেন। বিকেল ৪টায় ধারণকৃত বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত হবে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে ‘ফিড’ নিয়ে অন্যান্য সব বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারে একই সময়ে জাতীয় বাজেট বক্তব্য প্রচারের অনুরোধ করা হয়েছে এক তথ্য বিবরণীতে।
এর আগে সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন দেশের দায়িত্বে ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়েছিল তখনকার অর্থ উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের বাজেট বক্তব্য (২০০৮-২০০৯ অর্থবছর)।
****এক নজরে বাংলাদেশের ৫৩টি জাতীয় বাজেট****
নিচে ক্রমানুসারে বাংলাদেশের ৫৩টি জাতীয় বাজেট এক নজরে তুলে ধরা হলো। এখানে বাজেটের পরিমাণ ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দ উল্লেখ করা হয়েছে।
অর্থবছর- উপস্থাপক- মোট বাজেট- বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি):
১৯৭২-৭৩- তাজউদ্দিন আহমেদ- ৭৮৬ কোটি টাকা – ৫০১ কোটি টাকা।
১৯৭৩-৭৪- তাজউদ্দিন আহমেদ- ৯৯৫ কোটি টাকা – ৫২৫ কোটি টাকা।
১৯৭৪-৭৫- তাজউদ্দিন আহমেদ- ১ হাজার ৮৪ কোটি টাকা – ৫২৫ কোটি টাকা।
১৯৭৫-৭৬- ড. আজিজুর রহমান মল্লিক- ১ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা – ৯৫০ কোটি টাকা।
১৯৭৬-৭৭- মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান- ১ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা – ১ হাজার ২২২ কোটি টাকা।
১৯৭৭-৭৮- লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান- ২ হাজার ১৮৪ কোটি টাকা – ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা।
১৯৭৮-৭৯- প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান- ২ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা – ১ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা।
১৯৭৯-৮০- ড. এম এন হুদা- ৩ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা – ২ হাজার ১২৩ কোটি টাকা।
১৯৮০-৮১ এম সাইফুর রহমান- ৪ হাজার ১০৮ কোটি টাকা – ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
১৯৮১-৮২- এম সাইফুর রহমান- ৪ হাজার ৬৭৭ কোটি- ৩ হাজার ১৫ কোটি টাকা।
১৯৮২-৮৩- এ এম এ মুহিত- ৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা – ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
১৯৮৩-৮৪- এ এম এ মুহিত- ৫ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা – ৩ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা।
১৯৮৪-৮৫- এম সাইয়েদুজ্জামান- ৬ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা – ৩ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা।
১৯৮৫-৮৬- এম সাইয়েদুজ্জামান- ৭ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা – ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা।
১৯৮৬-৮৭- এম সাইয়েদুজ্জামান- ৮ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা – ৪ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা।
১৯৮৭-৮৮- এম সাইয়েদুজ্জামান- ৮ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা – ৫ হাজার ৪৬ কোটি টাকা।
১৯৮৮-৮৯- মেজর জেনারেল মুনিম- ১০ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা – ৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা।
১৯৮৯-৯০- ড. ওয়াহিদুল হক- ১২ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা – ৫ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা।
১৯৯০-৯১- মেজর জেনারেল মুনিম- ১২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা – ৫ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা।
১৯৯১-৯২- এম সাইফুর রহমান- ১৫ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা – ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
১৯৯২-৯৩- এম সাইফুর রহমান- ১৭ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা – ৯ হাজার ৫৭ কোটি টাকা।
১৯৯৩-৯৪- এম সাইফুর রহমান- ১৯ হাজার ৫০ কোটি টাকা – ৯ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।
১৯৯৪-৯৫- এম সাইফুর রহমান- ২০ হাজার ৯৪৮ কোটি টাকা – ১১ হাজার কোটি টাকা।
১৯৯৫-৯৬- এম সাইফুর রহমান- ২৩ হাজার ১৭০ কোটি টাকা- ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
১৯৯৬-৯৭- শাহ এ এম এস কিবরিয়া – ২৪ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা – ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
১৯৯৭-৯৮- শাহ এ এম এস কিবরিয়া – ২৭ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা – ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
১৯৯৮-৯৯- শাহ এ এম এস কিবরিয়া – ২৯ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা – ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
১৯৯৯-২০০০- শাহ এ এম এস কিবরিয়া – ৩৪ হাজার ২৫২ কোটি টাকা – ১২ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা।
২০০০-০১- শাহ এ এম এস কিবরিয়া – ৩৮ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা- ১৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
২০০১-০২- শাহ এ এম এস কিবরিয়া – ৪২ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা – ১৯ হাজার কোটি টাকা।
২০০২-০৩- এম সাইফুর রহমান- ৪৪ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা- ১৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
২০০৩-০৪- এম সাইফুর রহমান- ৫১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা- ২০ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
২০০৪-০৫- এম সাইফুর রহমান- ৫৭ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা- ২২ হাজার কোটি টাকা।
২০০৫-০৬- এম সাইফুর রহমান- ৬১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা- ২৩ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা।
২০০৬-০৭- এম সাইফুর রহমান- ৬৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা- ২৬ হাজার কোটি টাকা।
২০০৭-০৮- মির্জা আজিজুল ইসলাম- ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা- ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
২০০৮-০৯- মির্জা আজিজুল ইসলাম- ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা- ২৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
২০০৯-১০- এ এম এ মুহিত- ১ লাখ ১৩ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা- ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
২০১০-১১- এ এম এ মুহিত- ১ লাখ ৩২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা- ৩৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
২০১১-১২- এ এম এ মুহিত- ১ লাখ ৬১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা- ৪১ হাজার ৮০ কোটি টাকা।
২০১২-১৩- এ এম এ মুহিত- ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা- ৫২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা।
২০১৩-১৪- এ এম এ মুহিত- ২ লাখ ২২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা- ৬০ হাজার কোটি টাকা।
২০১৪-১৫- এ এম এ মুহিত- ২ লাখ ৫০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা- ৭৫ হাজার কোটি টাকা।
২০১৫-১৬- এ এম এ মুহিত- ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা- ৯৩ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা।
২০১৬-১৭- এ এম এ মুহিত- ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা- ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
২০১৭-১৮- এ এম এ মুহিত- ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকা- ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা।
২০১৮-১৯- এ এম এ মুহিত- ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা- ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
২০১৯-২০- আ হ ম মুস্তফা কামাল- ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা- ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
২০২০-২১- আ হ ম মুস্তফা কামাল- ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা- ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
২০২১-২২- আ হ ম মুস্তফা কামাল- ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা- ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা।
২০২২-২৩- আ হ ম মুস্তফা কামাল- ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা- ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।
২০২৩-২৪- আ হ ম মুস্তফা কামাল- ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা- ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা।
২০২৪-২৫- এ এইচ মাহমুদ আলী- ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা- ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
এ এম এ মুহিত ও এম সাইফুর রহমান বিভিন্ন মেয়াদে সর্বোচ্চ ১২টি করে বাজেট পেশ করেছেন।