রাজারহাটে প্রমত্তা তিস্তার বুক জুড়ে ধু-ধু বালুচর

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, আব্দুল হাকিম সবুজ, ২১ এপ্রিল ২০২০ ইং (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : বর্ষা মৌসুমের প্রমত্তা তিস্তা নদী এখন নাব্যতা হারিয়ে মৃত নদীতে পরিনত হয়েছে। পানি বিহীন নদীর বুকে এখন ধু-ধু বালুচর। মাঝে মাঝে সবুজের সমারোহ। চাষাবাদ হচ্ছে ইরি-বোরো, ভুট্রা, বাদাম, পিয়াজ, মিষ্টি কুমড়া সহ রকমারী ফসল। কোথাও কোথাও নদী ভাঙ্গনে সর্বশান্ত মানুষ গুলো নতুন করে জেগে উঠা চরে বসতি স্থাপন ও দোকানপাট তৈরী করছে ।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদীর শতশত হেক্টর জমিতে বালুর স্তর পরেছে। নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে নৌ রুট। যুগযুগ ধরে নব্যতা হারিয়ে তিস্তা নদী চলতি শুস্ক মৌসুমে শুরুতেই পানি শুন্য হয়ে পরেছে। বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে নুড়ি পাথর, কাকনযুক্ত বালি ও মাটি বয়ে আসার কারণে দ্রুত নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় এঅবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিগত ৩ দশকেরও বেশী সময় ধরে ভারতীয় পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় কেটে জনবসতি গড়ে তোলার কাজ চলছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া পরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে তিস্তা নদী। নানা প্রয়োজনে নদী পথে এক স্থান থেকে অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষকে এখন নদীর বুক জুড়ে জেগে উঠা চরের মাইলের পর মাইল রাস্তা পাঁয়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও মাঝ নদীতে পানি থাকলেও নাব্যতা সংকটের কারনে নৌ চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। নদী তীরবর্তী এলাকার জনসাধারনকে সচারাচর পায়ে হেঁটেই হাঁটু জল পাড়ি দিচ্ছে।

অপরদিকে প্রতি বছর তিস্তা নদী চরের কোথাও কোথাও অতিরিক্ত বালু ও কাকনযুক্ত মাটির স্তর পরে অনাবাদী করে তুলছে আবাদী জমি।প্রতি বছর বন্যার কারণে চরের অনেক জমি সেচ সুবিধা থেকে বিরত থাকে। এছাড়া শুস্ক মৌসুমে পানির স্তর অনেক নীচে নেমে যাওয়ায় কোথাও কোথাও ইরি- বোরো চাষাবাদ করতে পারেনি কৃষকরা। কারণ এতদা লের বিপুল পরিমান জমি প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিও মাহমুদ হাসান জানান, পর্যাক্রমে কুড়িগ্রামে তিস্তা সহ ১৬টি নদী ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা আছে। মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চায়না পাওয়ার কোম্পানী তিস্তা নদী ড্রেজিংয়ের কাজ করবে। তবে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে তা জানা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *