বাসদ আহ্বায়ক কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক আর নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ১০ নভেম্বর, ২০১৭, (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪): বাসদ আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, খ্যাতিমান রাজনীতিবীদ আ ফ ম মাহবুবুল হক আর নেই। আজ ১০ নভেম্বর’১৭ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০.১৫ মি. কানাডার অটোয়ার সিভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুনোগ্রাহী রেখে যান। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদ এর পক্ষ থেকে পার্টির আহবায়ক কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক এর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।
দলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সন্তোষ গুপ্ত, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শওকত হোসেন আহমেদ, মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, ওয়াহিদুজ্জামান এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক ছিলেন শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্ঠা, বিপ্লবী রাজনীতিতে তার আপোষহীন লড়াই এদেশের বামপন্থী রাজনৈতিকদের অনাদিকাল পথ দেখাবে। সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অজন্ম সেনানী এই বীর যোদ্ধার মৃত্যুতে দেশের বাম আন্দোলনের অপূরনীয় ক্ষতি হলো।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, কানাডার সময় সন্ধ্যায় ৭.৩০মি. সাবেক আপোষহীন ছাত্রনেতা কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক ব্রেইন হেমারেজ হয়েছে ভর্তি হয়েছিলেন । তিনি ১৯৪৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার মৃত ফজলুল হক, মাতা মরিয়ামেন নেছার ৬ মেয়ের মধ্যে ১ ছেলে আ ফ ম মাহবুবুল হক। এসএসসি ও এইচএসসিতে তিনি মেধার তালিকায় স্থান করে পাশ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতির ছাত্র ছিলেন। কমরেড আ ফ ম মাহবুবুল হক গত ২০০৪ সালের ২৫ অক্টোবর ঢাকায় অজ্ঞাত ঘাতকদ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হওয়ার তিনি দেশে চিকিৎসা শেষে সর্বশেষ কানাডায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা আ ফ ম মাহবুবুল হক ১৯৬২ সালে স্কুল জীবনে শরীফ কমিশনের প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষানীতি বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন ও পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন। তিনি ১৯৬৭-৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ সূর্যসেন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ৬৮-৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্থান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য, ’৬৯-৭০ সালে কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বি এল এফ’র অন্যতম প্রশিক্ষক ও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ’৭৩-’৭৮ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৮-৮০ সালে ‘জাসদ’ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ১৯৮০ সালের শেষের দিকে ‘বাসদের’ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন।
১৯৮৩ সালে বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নিযুক্ত হন। আপোষহীন এই নেতা ১৯৬৮ সালে প্রথম কারাবরণ করেন। ’৭৬-৭৮ সাল পর্যন্ত পুনরায় রাজবন্দি হিসাবে কারাগারে কাটান। ১৯৮৬ সালে আবার কারাবরণ করেন। ১৯৯৫ সালে ঋণখেলাপী কালোটাকার মালিকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হন।