নরসিংদী জেলা কারাগারে এক কয়েদীর মৃত্যু

নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি, কে.এইচ.নজরুল ইসলাম, ১৫ মার্চ ২০২০ ইং, (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নরসিংদীতে মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন (৫৬) নামে জেলা কারাগারের এক কয়েদীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (১৪ মার্চ) দিবাগত রাত দুইটার পর কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণ পর চিকিসৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন । নিহত জয়নাল আবেদীন রায়পুরা উপজেলার হাসিমপুর গ্রামের মৃত: শামসু মিয়ার পুত্র।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিসৎক ডা: শওকত হাসান শাকিল সাংবাদিকদের জানান, রাত ২.৩৬ মিনিটে জয়নাল আবেদীন নামে এক কয়েদীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন জেলা কারাগারের লোকজন। পরে চিকিৎসা চলাকালীন তার মৃত্যু হয়। নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা: মিজানুর রহমান জানান, নিহত জয়নাল আবেদীন পূর্ব থেকে হার্ট এর রোগী ও শরীরে ডায়াবেটিস  ছিলো। আমি নিজেও তাকে চিকিৎসা দিয়ে ছিলাম। তবে কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা ময়না তদন্ত শেষে বলা যাবে।

এদিকে নিহত জয়নাল আবেদীনের মেয়ের জামাই মামুন হাসপাতালের গেইটে জানান, আমার শ্বশুর নির্দোষ ছিলেন, তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। অবশেষে তাকে কারাগারে থেকেই মরতে হলো। জানা যায়, ২০১৮ সালের এক হত্যা মামলায় সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে নরসিংদীর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে এ মামলার আরেক আসামী নাসির (২২) এর জবানবন্দি অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল মাস্টারকে শিশু মামুন (৭) হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত হলে ২১ মাস ধরে নরসিংদী জেলা কারাগারে বন্ধী ছিলেন।

এ বিষয়ে তৎকালীন নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন (২০১৮ সালের ১১ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, একই বছরের ২০ জুন রায়পুরা উপজেলার হাসিমপুর এলাকার প্রবাস ফেরত সুজন মিয়ার ৭ বছর বয়সী ছেলে মামুন খেলতে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। তিনদিন পর (২৩ জুন ২০১৮) দুপুরে প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে শিশু মামুনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সুজন মিয়া বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় প্রথমে হত্যায় জড়িত সন্দেহে জয়নাল মাষ্টারকে আটক করা হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত মূল আসামী নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হলে সে জানায়, প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই অপহরণ করে অন্যত্র রেখে দুইদিন অভুক্ত রাখার পর শিশু মামুনকে হত্যা করা হয়। পরে সন্দেহ থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী জয়নাল মাস্টারের বাড়ির ছাদে লাশ রেখে দেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *