ঝিনাইদহে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক ৫টি সরকারী প্রতিষ্ঠান চালু হয়নি এক যুগেও

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) : ঝিনাইদহ জেলা শহরে স্থাপিত স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক ৫টি সরকারী প্রতিষ্ঠান পড়ে আছে প্রায় এক যুগ ধরে। এ সব প্রতিষ্ঠানের সুন্দর ভবন নির্মান ও মুল্যবান যন্ত্রাংশ কেনা হলেও নেই কেবল কর্মকর্তা কর্মচারী। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ইতিমধ্যে ভবনের জানালা দরজা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও মুল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০০৪ সালের দিকে ঝিনাইদহ জেলা শহরে স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক ৬টি সরকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ মসিউর রহমান এ সব প্রতিষ্ঠান স্থাপনে অগ্রনী ভুমিকা পালন করেন। কিন্তু তারপরে যে সব জনপ্রতিনিধি নির্বচিত হয়ে এসেছেন তারা চেষ্টা করেও এই প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করতে পারেনি।

ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতা এ সব প্রতিষ্ঠান চালু করতে মন্ত্রী ও সচিবালয়ে ঘুরেছেন, কিন্তু কোন ফল হয়নি। ঝিনাইদহ গনপুর্ত ও হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং অফিস সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের ধান হাড়িয়া মৌজায় ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে শিশু হাসপাতাল নির্মান করা হয়। কিন্তু হাসপাতালটি চালু করা যায়নি ১২ বছরেও। ফলে সদর হাসপাতালে শিশু রোগীদের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশু হাসপাতালটি চালু না হওয়ার পেছনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও জনপ্রতিনিধিদের গাফলতিকে দায়ী করছেন জেলার সাধারণ মানুষ।

ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ায় ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রতিবন্ধি স্কুল, ধানহাড়িয়ায় ১৮ কোটি টাকা ব্যায়ে মেডিকেল এ্যসিসটেন্ট, হাসপাতাল চত্বরে ১৬ লাখ টাকা ব্যায়ে করণারী কেয়ার ইউনিট ও পুরাতন হাসপাতাল চত্বরে ১৮ লাখ টাকা ব্যায়ে খাবার স্যালাইন ফ্যক্টরী স্থাপন করা হলেও আজও আলোর মুখ দেখিনি। কবে চালু হবে কিংবা আদৌ চালু করা সম্ভব কিনা তা অনিশ্চিত। এ সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একমাত্র শহরের চাকলাপাড়ায় স্থাপতি ১৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজী চালু করা হলেও প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে জমি না পাওয়ায় ট্রমা হাসপাতাল নির্মান প্রকল্পটি বাতিল হয়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে সরকারী পরিসেবা দপ্তরগুলো এ সব স্বাস্থ্যসেবা মুলক প্রতিষ্ঠান চালু করতে ব্যর্থ হয়েছে। ঝিনাইদহ বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দুলাল চক্রবর্তী জানান, স্থাপিত এ সব প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক হলেও জেলার মানুষের কল্যানে কাজ করতো।

তিনি বলেন, নানান জটিলতার কারণে এ সব প্রতিষ্ঠান চালু করা যাচ্ছে না। এর মধ্যে পোষ্ট ক্রিয়েট ও বেতন কোড সংক্রান্ত জটিলতা। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ রাশেদা সুলতানা জানান, এ সব প্রতিষ্ঠান চালু করতে আমরা প্রতিনিয়ত মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়ে যোগাযোগ রাখছি। তিনি বলেন, খুব দ্রুতই শিশু হাসপাতালটি আমরা চালু করতে পারবো। এ নিয়ে সর্বক্ষন যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *