চৌদ্দগ্রাম ২০১৫ সালে চলন্ত বাসে অগ্নিসংযোগ করে হত্যার ঘটনায়, সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবসহ ১৯০ জনের বিরুদ্ধে
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, আব্দুল মান্নান, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম-২০১৫ সালে চলন্ত বাসে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে ৮ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সাবেক রেলমন্ত্রী ও কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম আসন) এর সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ মুজিবুল হক মুজিব, পুলিশের সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক আইজিপি ও র্যাব প্রধান বেনজির, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান, কয়েকজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, কুমিল্লা জেলা ও চৌদ্দগ্রাম থানার কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা সহ ১৯০ জনের বিরুদ্ধে পুড়ে যাওয়া আইকন পরিবহন বাসের মালিক আবুল খায়ের আজ বুধবার কুমিল্লার একটি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
এতে ১৩০ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৬০ জনকে আসামী করা হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর ৫নং আমলী আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিক মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য চৌদ্দগ্রাম থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট মো: কাইমুল হক রিংকু।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালের ২ ফেরুয়ারি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নোয়াবাজার এলাকার জগমোহন পুরে গভীর রাতে কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা আইকন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ওই বাসের ৮ জন যাত্রী পুড়ে মৃত্যুবরণ করেন। মামলার বাদী বাস মালিক আবুল খায়ের বলেন, বাস চালক ও তার সহকারীর সাথে কথা বলে তিনি জানেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে তৎকালীন সময়ে পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়।
এদিকে স্থানীয় এমপি রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বাস মালিককে ডেকে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে বলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় মুজিবুল হক তাকে থাপ্পড় মেরে বলেন-এই লাইনে কিভাবে বাস চালাস তা দেখে নেবো। পরে তার লিজ নেয়া ৫টি বাস তারা কেড়ে নিয়ে যায়। বাস মালিক বিগত ১০ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন। তিনি দোষীদের বিচার ও শাস্তি চান।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামীরা হলেন, সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, পুলিশের সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক র্যাব প্রধান বেনজীর আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক এসপি শাহ আবিদ হোসেন, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান, কুমিল্লা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, চৌদ্দগ্রাম থানার সাবেক ওসি উত্তম কুমার চক্রবর্তী, পৌর মেয়র জিএম মীর হোসেন মীরু, সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন, শাহজালাল মজুমদার, ভিপি মাহবুব হোসেন, আলমগীর কবির মজুমদার, ইসমাইল হোসেন বাচ্চু, জিএম জাহিদ হোসেন টিপু, কাজী জাফর আহমেদ, মাহফুজ আলম, জয়নাল আবেদীন খোরশেদ, ছৈয়দ আহম্মদ ভূঁইয়া খোকন, জানে আলম ভূঁইয়া খলিলুর রহমান মজুমদার, সালাহ উদ্দীন মজুমদার, আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল আলম মোল্লা, ইদ্রিস মিয়াজী, ফরাস উদ্দীন রিপন, যুবলীগ নেতা মাছুম বিল্লাহ সহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মীরে বিরুদ্ধে পুলিশবাদী হয়ে ঘটনার পরদিন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিল। এ মামলায় চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন নেতাকর্মী জেলজুলুমের শিকার হয়েছে।