নীলফামারী ভূমি অফিসে সহজে মিলছে গ্রহক সেবা : নেই ভোগান্তি
নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাম সাগর, ২৯ জুন, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নীলফামারী সদর উপজেলার ভূমি অফিস গুলোতে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। এতে বাড়ছে গ্রাহক সেবা। ঘরে বসেই সাধারণ মানুষ অন-লাইনের মাধ্যমে আবেদন করলে দ্রুত গতিতে মিলছে সমাধান। আগে জমির দলিল ও খাজনা-খারিজ করতে গ্রাকদের ঘুরতে হত মাসকা মাস। টাকা না দিলে নড়তো না কোন ফাইল, এ চিত্র আর দেখা যায় না এসব ভূমি অফিস গুলোতে।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখে নীলফামারী সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বেলায়েত হোসেন যোগদানের পর থেকে একটু একটু করে পাল্টে দিয়েছে অফিসের চিত্র। ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে নীলফামারী সদর উপজেলার ভূমি অফিস গুলোতে আর নেই গ্রাহক হয়রানি। জমির দলিল, খাজনা-খারিজ করতে ইউনিয়ন ভূমি অফিস গুলোতে অনিয়ম ও দুর্নীতির বাসা বাঁধায় সাধারণ মানুষ ভূমি অফিসে আসতে ভয় পেত। দালালদের উৎপাত ছিল চোখ কাড়ার মতো। গ্রহক সেবা অন-লাইন হওয়ায় নেই আর দালাল নেই কোন উৎপাত। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে অফিসে খোলা হয়েছে সহায়তা কেন্দ্র, তথ্য বাতায়ন, উপজেলা রাজস্ব আদালত, সুবিনস্ত রেকর্ড রুম, মিনি লাইব্রেরি, রাজস্ব আদালত, গণশুনানির ব্যবস্থার মাধ্যমে জবাবদিহিতাসহ তৃণমূলে ভূমি সেবা। সব মিলিয়ে পাল্টে গেছে উপজেলা ভূমি অফিস। এসব উদ্যোগ গ্রহণ করায় সন্তোষ প্রকাশ করছেন ভূমি অফিসে আসা সাধারণ মানুষ।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, এক সময় উপজেলা ভূমি অফিস ঘুষ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। টাকা ছাড়া কোনো কাজ হত না। অফিসের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ভূমি অফিসে ভূমি-সংক্রান্ত সব বিষয়ে জনসাধারণকে অবহিত করতে টাঙানো হয়েছে সিটিজেন চার্টার। সেবা পেতে অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, ছবি, মোবাইল নাম্বারসহ বোর্ড টাঙানো হয়েছে। বিনামূল্যে সর্বপ্রকার আবেদন ফরম প্রদান করা হয়। ভূমি আইন সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে ও নিজের জমি নিজে রক্ষায় করণীয় সতর্ক বাণী সংবলিত বোর্ড বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে উপজেলা ভূমি অফিসে।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বেলায়েত হোসেন জানান, অফিসে ভূমি-সংক্রান্ত কাজে আসা জনসাধারণের কাংক্ষিত সেবা নিশ্চিত করতে অফিসের ঘুষ দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দালালদের দৌরাত্ব রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় বর্তমানে ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ই-নামজারী, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করা, ডিজিটাল রেকর্ডরুম ইত্যাদি বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে এখন সেবা প্রত্যাশীদের অফিসে ঘুরতে হচ্ছে না। সেবা সহজীকরণের ফলে বাড়িতে বসে থেকেই সব সেবা এখন পাওয়া যাচ্ছে। ডিজিটালাইজেশনের ফলে মনিটরিংও অনেক বেড়েছে। ফলে জনগণ নির্ধারিত সময়ে প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছেন। কোন গ্রাহককে এখন আর দালালদের খপ্পরে পড়তে হচ্ছে না।