১৪ বছর ধরে চিকিৎসক শুধু কাগজেই আছে উপস্থিত নাই
গাইবান্ধা প্রতিনিধি, একরামুল হক, ০৭ জুন, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মাজেদুল ইসলাম ৯ বছর ৪ মাস, ডা. সালেহীন কাদেরী ১৪ বছর ৪ মাস, এবং সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সাদিয়া খান সানি সাড়ে ছয় বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে কর্মস্থলে ফিরতে বারবার চিঠি দেওয়া হলেও কোনো জবাব পায়নি কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় চিকিৎসক সংকটে হাসপাতাল দুটিতে সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ফুলছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সালেহীন কাদেরী ২০০৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ও সহকারী সার্জন মাজেদুল ইসলাম ২০১১ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। সাদুল্যাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সাদিয়া খান সানি অনুপস্থিত আছেন ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে।
এই তিন চিকিৎসকের মধ্যে সালেহীন কাদেরী চলে যাওয়ার সময় ১৪ বছর আগে পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি । আর বাকি দুই চিকিৎসক নির্ধারিত ছুটির সময় পেরিয়ে গেলেও কর্মস্থলে না ফেরায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়েছে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শুধু তাই নয়, হাসপাতালে যোগদানের সময় জমা দেওয়া ঠিকানায় কয়েকবার চিঠি দেওয়া হলেও তার কোনো জবাব দেননি ওই দুই চিকিৎসক। ফলে চিকিৎসক সংকটের কারণে এই দুটি হাসপাতালে গিয়ে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন কাঙ্খিত চিকিৎসাসেবা থেকে। তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, সালেহীন কাদেরী যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন ও ডা. মাজেদুল ইসলাম একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহীনুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘ডা. সাদিয়া খান সানির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অনেকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু অদ্যাবধি তার পোস্টিং দিয়ে রাখা হয়েছে এই হাসপাতালে।
এ হাসপাতালে ১৭ চিকিৎসকের মধ্যে আছেন ১৩ জন। ফুলছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. রফিকুজ্জামান বলেন, ডা. সালেহীন কাদেরী ও ডা. মাজেদুল ইসলামের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অনেকবার জানানোর পরও ১৪ বছর ধরে তাদের এখানে পোস্টিং দিয়ে রাখা হয়েছে। এদিকে ১৭ চিকিৎসকের মধ্যে মাত্র ৯ জন দিয়েই কোনোমতে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
গাইবান্ধার সিভিল সার্জন এ বি এম আবু হানিফ বলেন, এসব চিকিৎসকের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে বহুবার, তারপরও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোতে তাদের পোস্টিং দিয়ে রাখা হয়েছে। ফলে অন্য চিকিৎসক দেওয়া হচ্ছে না।