স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার পেতে অনশনে করছেন কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্রী
নরসিংদী প্রতিনিধি, কে.এইচ.নজরুল ইসলাম, ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ভৈরব জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের ২বর্ষের ছাত্রী, স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার পেতে অনশনে নেমেছে। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামীর বাড়ির আঙ্গিনায় অনশনে নেমেছে সীমা নামে এক নববধু।
৭ ফেব্রুয়ারী বুধবার সন্ধা থেকে এখন পযর্ন্ত অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন এই নববধুু। ২০ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে নববধুকে স্বামীর বাড়িতে তুলে নিচ্ছেনা শশুরবাড়ীর লোকজন। বাড়ীতে গেলে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন তার উপর নির্যাতন চালায়। দেবর, ননদ ও শাশুরী নববধু সীমা আক্তারকে পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ করেন। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের লোকজন তাদের বাড়ীতে ভিড় জমায়।
ভৈরব জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ২য় বর্ষের ছাত্রী সীমা আক্তার উপজেলার সাহেরচর গ্রামের মিলন মিয়ার মেয়ে। বিয়ে মানেন না বলে সীমার স্বামী জানিয়েছেন, অজ্ঞান করে ভয় ভিতি দেখিয়ে বিয়ে করানো হয়েছে। এদিকে নববধুর উপর নির্যাতন, যৌতুকদাবী ও মারপিটের অভিযোগ এনে রায়পুরা থানায় অভিযোগ দায়েররের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্যাতিতার পরিবার।
এলাকাবাসী, নির্যাতিতা ও তার পরিবারের সূত্রে জানা যায়, রায়পুরার বড়চর গ্রামের আব্দুল্লাহ মুখারজেনের ছেলে জুবায়ের হোসেনের সাথে র্দীঘ দিন যাবৎ সীমা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। চার মাস পূর্বে উভয় পক্ষের অভিবাকদের উপস্থিতিতে কাজী অফিসে জুবায়ের ও সীমার বিয়ে পড়ানো হয়। পরে অনুষ্ঠান করে নববধুকে বাড়ীতে তুলে নেয়া হবে বলে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন সীমাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
সম্পতি সীমার স্বামী জুবায়ের পুনরায় অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমন সংবাদে নববধু সীমা স্বামীর বাড়ীতে যায়। ওই সময় তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজন তাকে ঘরে যেতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে স্বামীর ঘরে যেতে চাইলে তার উপর শ্বশুরবাড়ীর লোকজন চড়াও হয়। এবং তাকে বাড়ী থেকে বের করে দিতে চায়।
এতে রাজি না হওয়ায় দেবর-জুনায়েদ, ননদ- সানি, রোকসানা ও শ্বাশুরী মমতাজ বেগম ও খালা শ্বাশুরী নূরনাহার বেগম তাকে এলোপাথারী মারপিট শুরু করেন। মারপিট করে তাকে বাড়ির বাহিরে বের করে দেয়। একই সাথে ২০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করেন। পরে স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে স্বামীর বাড়ীর আঙ্গিনায় অনশনে বসে নববধু সীমা।
অপ্রতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিষয়টি রায়পুরা থানা পুলিশিকে অবহিত করা হয়েছে। নববধু সীমা আক্তার বলেন, স্বামীর বাড়ি আসার পর দেবর, ননদ ও শাশুরী আমাকে বাড়িতে ডুকতে দিচ্ছেনা। স্বামীর ঘরে ডুকতে চাইলে শ্বাশুরী দেবর ননদ আমাকে ২০ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার কাথা জানায়।
এতো টাকা নেই জানালে তারা আমাকে বাড়ি থেকে টেনে হেচড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা চালায়। রাজি না হলে তারা আমারে এলোপাথারী মারপিট করেন। আমার মাথার চুল টেনে ছিড়ে ফেলেন। অপর একটি সূত্রে জানাযায়, প্রায় ৫ বছর যাবৎ সীমা ও জুবায়ের প্রেম করে আসছিল।
বি-বাড়িয়ার আশুগঞ্জ এলাকায় ঘুরতে গেলে স্থানীয় লোকজন প্রেমিক যুগলকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরে উভয় পক্ষের অভিবাবক ও আশুগঞ্জ থানা পুলিশের উপস্থিতেতে কাজি অফিসে তাদের বিয়ে পড়ানো হয়। অনুষ্ঠান করে নববধুকে ঘরে তোলা হবে জানিয়ে শশুরবাড়ীর লোকজন সীমাকে তার বাবার সাথে বাবার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়।
তবে প্রেম করে বিয়ে করাকে কেন্দ্র করে জুবায়েরর বাড়ির লোকজন তার উপর ক্ষিপ্ত হয়। সম্প্রতি জুবায়ের সীমাকে তালাক প্রদান করে পুনরায় বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই সংবাদে সীমা তার স্বামীর বাড়িতে গেলে তাকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
তবে এই বিয়ে মানেন না বলে সীমার স্বামী জানিয়েছেন, আমাকে অজ্ঞান করে ভয় ভিতি দেখিয়ে বিয়ে করানো হয়েছে। আমি এই বিয়ে মানি না। তবে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের কথা জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন,ইতোমধ্যেই বিষয়টি আমাদের নলেজে এসেছে। নির্যাতিতা বা তার পরিবার অভিযোগ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।