সিগারেট যতদিন থাকবে, বিড়ি শিল্পও ততদিন থাকবে; ঝিনাইদহে বিড়ি বন্ধের প্রতিবাদ সম্মেলন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ২৫ এপ্রিল, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : দেশে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে বিড়ি শিল্প এবং ২০৩৮ সালের মধ্যে সিগারেট শিল্পকে বন্ধ করার ঘোষণাকে বৈষম্যমূলক মর্মে সিগারেটের আগে বিড়ি শিল্প বন্ধ না করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিড়ি ভোক্তা ফেডারেশন সমিতির আয়োজনে ঝিনাইদহের ৬টি থানা থেকে আসা খেটে খাওয়া মানুষ।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) ঝিনাইদহের আরাপপুরের এতিম খানার মোড়ে এক প্রতিবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশে ঝিনাইদহের ৬টি থানার গাঁও-গ্রাম থেকে আসা বক্তারা বলেন, ভারতের মতো বাংলাদেশেও বিড়ি শিল্পকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। প্রতি হাজার বিড়িতে শুল্ক ১৪ টাকা নির্ধারণসহ বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি ছাড়া তামাক চাষ কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না।
বক্তারা আরো বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ৩৫ টাকা মূল্যের সিগারেট ২৭ টাকায় বিক্রি করছে। এ ব্যাপারে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে বিড়ি শিল্পকে বন্ধের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন অর্থমন্ত্রী। শৈলকুপা থেকে আসা কৃষক হারুন অর রশিদ বলেন, গত ৩১ মার্চ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের কাছে ‘তামাক ও সিগারেট উৎপাদন বন্ধকরণ’ শিরোনামে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে আগামী দুই বছরের মধ্যে বিড়ি শিল্প বন্ধ ও সিগারেট শিল্প বন্ধ করতে ২২ বছর সময় দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন তিনি। এটা অবশ্যই বিড়ি ও সিগারেটের মধ্যে এক বিরাট বৈষম্য সৃষ্টির পায়তারা।
ঝিনাইদহের বেশিরভাগ চাষী তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে হরিনাকুন্ড থেকে আসা সাহেব আলী বলেন, এই তামাক বিড়ি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমরা গরিব মানুষ বিড়ি বন্ধ করা হলে আমরা সাধারনরা সিগারেট কিনে খেতে পারব না। তাছাড়া ২০০৯-১০ থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত সিগারেট কোম্পানিগুলো ১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে ও বিগত ৮ বছরে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো ১৩ হাজার কোটি টাকার মতো পাচার করেছে বলে পত্রিকায় খবর আছে। তারপরও তাদের কোন যুক্তিতে ২২ বছর অতিরিক্ত সময় দিয়ে এ বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে প্রশ্ন তোলেন বক্তরা।
সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সিগারেট যতদিন থাকবে, বিড়ি শিল্পও ততদিন থাকবে; মর্মে জোর দাবি তুলে ধরা হয়। ভারতের মতো প্রতিহাজার বিড়িতে শুল্ক ১৪ টাকা করতে হবে এবং যেসব বিড়ি ফ্যাক্টরি ২০ লাখ শলাকার কম উৎপাদন করে তাদের কাছ শুল্ক নেওয়া বন্ধ রাখতে হবে। বাংলাদেশ বিড়ি ভোক্তা ফেডারেশন সমিতির আয়োজনে আঃ রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক মশিয়ার রহমান ঝিনাইদহ অঞ্চলের পক্ষে এ প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।