সন্ত্রাসী মতিয়ার রহমান কালু ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিভিন্ন অপকর্মে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারেক, ৩০ জুন, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলাবাড়ীয়া গ্রামের সন্ত্রাসী মতিয়ার রহমান কালু ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিভিন্ন অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে তাদের গ্রেফতার এবং বিচারের দাবীতে উপজেলার ৫নং এলাঙ্গী ইউনিয়নের ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড বাসির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। হাসপাতাল সড়কের প্রেসক্লাব কোটচাঁদপুর অস্থায়ী কার্যালয়ে শুক্রবার বেলা ১১টার সময় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করে শোনান উপজেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষায়ক সম্পাদক বলাবাড়ীয়া গ্রামের মজনুর রহমান। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন এলাঙ্গী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হুরমত আলী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহাবুর খান, ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি শাহ্ আলম শেখ, ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি বাবলুর রহমান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজম্ম লীগের সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ।
লিখিত বক্তব্যে দাবী করা হয়, বলাবাড়িয়া গ্রামের গোলাম কাহারের ছেলে মতিয়ার রহমান কালু এলাকায় সে স্ব-ঘোষিত যুবলীগ নেতা। দীর্ঘদিন ধরে সে এলাকার মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজী এবং পুলিশের ভয় দেখিয়ে জামায়াত শিবিরসহ গ্রামের অসহায় মানুষের কাছ থেকে মাশুহারা নিয়ে আসছে। সেই সাথে কালু ও তার বাহিনীদ্বারা এলাকায় নারী নির্যাতন, চুরি ছিনতাই, মাদক ব্যবসা এমনকি রোড ডাকাতিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
এছাড়াও মতিয়ার রহমান কালু বাগডাঙ্গা গ্রামের হিন্দু সমপ্রদায় বলাই-এর কাছ থেকে জোরপূর্বক জমি রেজিষ্ট্রী করে নিয়েছে, তার অত্যাচারে ভিটে মাটি ফেলে দীর্ঘ চার বছর বলাবাড়িয়া গ্রামের নূরুল ইসলাম তার পরিবার নিয়ে গ্রাম ছাড়া হয়েছে। বলাবাড়িয়া গ্রামের শ্রী অমরেশ চৌকিদার তার পরিবারের ইজ্জত বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে গত ঈদের দিন বলাবাড়িয়া গ্রামের আলাউদ্দীনের পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া (১২) বছর বয়সী কন্যাকে কালু’র পোষ্য কয়েক জন বখাটেরা খারাপ ইঙ্গিত করে। আলাউদ্দীন বিষয়টি নিয়ে ওই সকল বখাটেদের অবিভাবকের কাছে অভিযোগ জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী মতিয়ার রহমান কালু ভুক্তভোগী মেয়েটির পিতা আলাউদ্দীনকে বেধড়ক মারপিঠ করে গুরুতর অবস্থায় ফেলে রাখে। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মজনুর রহমান বলেন, কালু তার সন্ত্রাসী বাহিনী এতটায় ভয়ঙ্কর যে কারণে ভয়ে এতদিন এলাকার কেউ কিছু বলতে সাহস পাইনি। বর্তমানে এলাকার মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে যে কারণে তারা আজ একত্রিত হয়ে ফুঁসে উঠেছে। বিপদ আচ করতে পেরে কালু ও তার বাহিনীর সদস্যরা গাঁ ঢাকা দিয়ে রয়েছে। যে কোন সময় রাতে’র আঁধারে ওরা এলাকার মানুষের ক্ষতি করতে পারে। যে কারণে আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শরিফুন্নেছা মিকি’র কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মতিয়ার রহমান কালু’কে নিয়ে এলাকায় বিস্তর অভিযোগ। বুঝিনা পুলিশ প্রশাসন কি করে ! তবে এলাকায় শান্তি বিনাশকারী এধরণের ব্যাক্তিকে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক আশরাফুল আলম খোকন বলেন, কালু যুবলীগের সদস্য তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ শুনতে পায়। তবে সংগঠনের আহবায়াক দেশের বাইরে থাকায় তার বিরুদ্ধে সংগঠন কি ব্যবস্থা নিবে এ মুহুর্তে কিছু বলতে পারছি না। কোটচাঁদপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, আলাউদ্দীন তার মেয়েকে নিয়ে যে অভিযোগ দাখিল করেছিলো সেটা মামলা হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে।