শিক্ষার্থীদের বর্ধিত চাহিদা পূরণ করতে সরকার তিন হাজার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একাডেমিক ভবন নির্মার্ণ ও আসবাবপত্র সরবরাহের উদ্যোগ, একনেকে ১৪ প্রকল্প অনুমোদন
ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সরকার তিন হাজার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একাডেমিক ভবন নির্মার্ণ ও আসবাবপত্র সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে ১০ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ৩’শ সংসদীয় এলাকায় বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বর্ধিত চাহিদা পূরণ এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত উন্নয়ন হবে। মঙ্গলবার নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পসহ ১৮ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ১৪টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১৬ হাজার ৩৭০ কোটি ৮১ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব ব্যয় ৯৫ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে ২ হাজার ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
বর্তমানে দেশে ৩২৭টি সরকারি ও ১৯ হাজার ৩৫৭টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বর্ধিত শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণ এবং শিক্ষার ভাল পরিবেশ সৃষ্টি হবে হলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়, ২০১৪ সালের ব্যানবেইসের রিপোর্ট অনুযায়ী মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৯১ লাখ ৬০ হাজার ৩৬৫ জন। প্রাথমিক পর্যায়ে বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিপুলহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বর্ধিত শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার সংস্থানের জন্য প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নতি পর্যাপ্তভাবে হয়নি। এ সকল শিক্ষার্থীদের একটি বিরাট অংশ মাধ্যমিক শিক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এদের সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণী কক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। সরকারের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর জুন, ২০১৭ হতে জুন, ২০২০ মেয়াদকালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং প্রাণি সম্পদকে ঝুঁকিমুক্ত করে আশ্রয় প্রদানের লক্ষ্যে বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙন এলাকায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৫০৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হবে। রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের ২৪৭টি উপজেলায় জানুয়ারি, ২০১৮ হতে জুন, ২০২২ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। একনেক সভায় প্রত্যেক জেলায় ত্রাণ গুদাম কাম দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্যে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পসমূহ হলো- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় মহানন্দা নদী ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম’ প্রকল্প,স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘বৃহত্তর চট্টগ্রাম গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের বৃহত্তর ফরিদপুর চরাঞ্চল এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় গবাদিপশুর জাত উন্নয়ন ও দুগ্ধের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিতকরণ কারখানা স্থাপন প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের অগ্রাধিকারমূলক গ্রামীণ পানি সরবরাহ প্রকল্প। পরিকল্পনা বিভাগের জরুরী ২০০৭ ঘূর্ণিঝড় পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন প্রকল্প, প্রকল্প সমন্বয় ও মনিটারিং ইউনিট, পিসিএমইউ (তৃতীয় পর্যায়)।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বগুড়া উপজেলার সাথে সংযুক্ত চাঁপাপুর-বরুড়া, নিমসার-বরুড়া এবং খাজুরিয়া-বরুড়া জেলা মহাসড়ক তিনটি যথাযথ মানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, জননিরাপত্তা বিভাগের ৭টি র্যাব কমপ্লেক্স নির্মাণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের এ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট (এপিআই) শিল্প পার্ক (৩য় সংশোধিত) প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।