শাজাহানপুরে ৪০ দিনের কর্মসুচিতে ভুয়া নাম দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে সরকারী অর্থ
বগুড়া জেলা প্রতিনিধি, আবদুল ওহাব, ৩ জানুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : বগুড়া শাজাহানপুরের আশেকপুর ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসুচিতে হত দরিদ্রদের তালিকায় ভুয়া নাম দিয়ে চলছে কর্মসুচির কাজ। আর এভাবে প্রকৃত হত দরিদ্ররা সুবিধা বঞ্চিত হলেও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে সরকারী অর্থ। গত কয়েক দিন ঐ ইউনিয়নের ৪০ দিনের কর্মসুচিতে গিয়ে এসব ভুয়া নামের প্রমান পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, বছরের ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসটি মঙ্গা কবলিত হওয়ায় সরকার হতদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্ম সৃজন কর্মসুচি গ্রহন করেছে। সরকারী নির্দেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ হত দরিদ্রদের তালিকা তৈরী করে এবং প্রতিটি শ্রমিককে দৈনিক ২০০ টাকা হারে পারিশ্রমিক দেয়া হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নে ১৪৩ জন হতদরিদ্র শ্রমিক তালিকায় অন্তভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে কাগজে কলমে ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৩৩ জন শ্রমিকের নাম অন্তভুক্ত করা হলেও ৬ জন ভুয়া নামের প্রমান পাওয়া যায়। নামগুলো হলো- মানিক, জলিল, একরাম, ইয়াছিন, রাজ্জাক ও রতন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বস্ত সুত্রে অনেকে জানিয়েছেন, এরা কখনও কাজে আসেনা। এসব ভুয়া নাম চেয়ারম্যান ও মেম্বররা দিয়েছে।
তারা আরও জানান, ভুয়ানাম হলেও বিল পাশ হতে কোন অসুবিধা হবেনা। তাদের বড় বড় জায়গায় হাত রয়েছে। হিসেব অনুযায়ী একজন শ্রমিকের বিপরীতে ২০০ টাকা মজুরী হলে ৬ জন শ্রমিকের বিপরীতে দৈনিক ১২ শত টাকা ভুয়ানাম দেখিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে\ আর দৈনিক ১২ শত টাকা হলে ৪০ দিনে এ টাকার পরিমান দাড়ায় ৪৮ হাজার টাকা। এমনিভাবে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। অথচ সঠিকভাবে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি করা হলে সরকারী এসব সুবিধা পেতো হত দরিদ্ররা। ফলে সরকারের সফলতাগুলো পৌছে যেতো গ্রামের প্রতিটি বাড়ীর দুয়ারে দুয়ারে। তথাপি বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই।
তবে ভুয়া নামের বিষয়টি নিয়ে এ কাজের সভাপতি ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য রোজিনা ও সোহেলের মতামত জানতে চাইলে তারা বলেন, এতে অসুবিধা নাই, চেয়ারম্যান সব জানে কোন অসুবিধা হবেনা। এদিকে ৬ জন ভুয়া নাম অন্তর্ভুক্তির কারন জানতে চাইলে আশেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফিরোজ আলম বলেন, এগুলো ইউপি সদস্যদের কাজ। তবে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
এ সম্পর্কে ৪০ দিনের কর্মসুচির তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা উপ সহকারী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ওবাইদুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি জানা নেই, তবে সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।