রাশিয়ার ইতিহাস
প্রবাস (রাশিয়া), ০৩ অক্টোবর, ২০১৭, (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪): রাশিয়া (রুশ: Россия রশিয়া), সরকারিভাবে রুশ ফেডারেশন নামে পরিচিত (রুশ: Российская Федерация রশিস্কায়া ফিদিরাৎসিয়া) যেটা উত্তর ইউরেশিয়াতে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। এই দেশটি অর্ধ প্রেসিডেনসিয়াল ফেডারেল প্রজাতন্ত্র যার সংবিধান ৮৩ টি ফেডারেল বিষয় দ্বারা গঠিত। রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়াও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কারসাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ যার রয়েছে পৃথিবীর মোট আবাসযোগ্য জমির এক অষ্টমাংশ। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)। রাশিয়া বিশ্বের নবম জনবহুল দেশ যেখানে ২০১২ হিসাব অনুযায়ী ১৪৩ মিলিয়ন লোক বসবাস করে।[৮] উত্তর এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে জায়গা সম্প্রসারণের ফলে রাশিয়া ৯টি সময় অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত এবং এখানে অনেক রকম ও বিস্তৃত পরিবেশের সমন্বয় ঘটেছে।
দেশটির ইতিহাস শুরু হয় ৩য় ও ৮ম খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ইস্ট স্লাভদের মাধ্যমে যারা ইউরোপের একটি স্বীকৃত জাতি হিসেবে পরিচিত ছিল।[৯] পরবর্তীতে ভারাঞ্জিয়ান যোদ্ধা ও তাদের বংশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও শাসিত হয় এবং নবম শতকে দেশটির উত্থান শুরু হয়। ৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য থেকে গোঁড়া খ্রিস্টান রীতি গৃহীত হয়। এর ফলে বাইজান্টাইন ও স্লোভাক সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটে যা পরবর্তী সহস্রাব্দ পর্যন্ত বহাল থাকে। রাশিয়া অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায় এবং বেশিরভাগ জমি মঙ্গোলদের আক্রমণের জন্য পদদলিত হয় ও যাযাবরদের জন্য স্বর্গ হয়ে ওঠে।[১০] মস্কোর গ্র্যান্ড ডিউকের জমিদার শেষ পর্যন্ত পার্শ্ববর্তী রুশ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করেন ও যাযাবরদের কাছে থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেন। তারা মূলত কিয়েভান রাশিয়ার রাজনীতি ও সংস্কৃতিকে শাসন করেন। ১৮ শতক পর্যন্ত এই জাতিটি বিজয়, আত্মসাৎ, এবং অন্বেষণ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে জায়গা সম্প্রসারণ করে ইউরোপের পোল্যান্ড থেকে উত্তর আমেরিকার আলাস্কা পর্যন্ত যা ছিল ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম সাম্রাজ্য।[১১][১২]
রুশ বিপ্লবের পর রুশীয় সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের বৃহত্তম, নেতৃস্থানীয় ও প্রয়োজনীয় সদস্য হয়ে ওঠে যা সংবিধান অনুযায়ী একটি সমাজতান্ত্রিক দেশ। এসময় এটি অত্যন্ত শক্তিশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে[১৩] যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা পালন করে।[১৪][১৫] সোভিয়েত যুগ ২০তম শতকের কিছু উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত সাফল্য পেয়েছিল যার মধ্যে ছিল বিশ্বের প্রথম মহাকাশযান ও প্রথম নভোচারী। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর সোভিয়েতের রুশীয় প্রজাতন্ত্র আর রুশ ফেডারেশন হিসেবে গঠিত হয় এবং একক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হয়।
রুশ অর্থনীতির তথাকথিত জিডিপি ও সমক্রয় ক্ষমতা বিশ্বের মধ্যে অষ্টম বৃহত্তম।[১৬] রাশিয়ার ব্যাপক খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ একে বিশ্বের বৃহত্তম মজুদদার হিসেবে তৈরি করেছে।[১৭] এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ। দেশটি পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন পাঁচটি স্বীকৃত দেশের মধ্যে অন্যতম এবং দেশটির বিশ্বের বৃহত্তম ধ্বংসাত্মক অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে। রাশিয়া একটি পরাক্রমশালী রাষ্ট্র যেটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং জি ৮, জি ২০, দি কাউন্সিল অফ ইউরোপ, দি এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনোমিক কোঅপারেশন, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা, ইউরেশীয় অর্থনৈতিক কমিউনিটি, ইউরোপ নিরাপত্তা সংগঠন কাউন্সিল (ও এস সি ই) ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য। স্বাধীন রাষ্ট্রের কমনওয়েলথের অন্যতম সদস্য।