রারাজারহাটে আ’লীগের ইউপি নির্বাচন ঘিরে নেতাকর্মীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ০২ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের দুটি করে কমিটি। শুধু উপজেলায় নয় রাজারহাট উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে দুটি করে কমিটি রয়েছে। প্রত্যেক কমিটির স্ব-স্ব পদের নেতারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের পদবী ব্যবহার করে আসছে। গত ৩০শে নভেম্বর ২০১৯ দুপুর ১২ঃ০০ ঘটিকায় রাজারহাট কারিগরি কলেজ মাঠে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামীলীগের প্রয়াত সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক (বর্তমান সভাপতি) আলহাজ্ব জাফর আলী উপস্থিত থেকে আওয়ামীলীগের (একাংশ) কাউন্সিলের মাধ্যমে আলহাজ্ব শাহের আলী কে সভাপতি ও আলহাজ্ব আবুনুর মোঃআখতারুজ্জামান কে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করেন।
জেলা আওয়ামিলীগের ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের একাংশ উক্ত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজেদের বৈধ কমিটি হিসেবে দাবী করে আসছে, কিন্তু অপর অংশের নেতাকর্মীরা সভাপতির অনুপস্থিতে ওই কমিটিকে পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে কাউন্সিল প্রত্যাখ্যান করে রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম চাষীর নেতৃত্বে ৩০শে নভেম্বর ২০১৯ একই দিনে বিকেল ৫ ঘটিকায় তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা রাজারহাট মহিলা ডিগ্রী কলেজ মাঠে কাউন্সিলের মাধ্যমে আলহাজ্ব আব্দুস সালাম চাষী কে সভাপতি ও অধ্যক্ষ আসিফ সোহরাওয়ার্দী রাজন কে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষণা করে।
এর আগে রাজারহাট উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম চাষী ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবুনুর মোঃআখতারুজ্জামান পৃথক পৃথক কমিটি গঠন করেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সম্নয়হীনতার কারণে নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে আলাদা আলাদা কমিটি গঠন করেন। উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ ৭ ইউনিয়নে দুটি করে আওয়ামীলীগের কমিটি থাকায় সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রাজারহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রবীন কর্মী বাদশা মিয়া বলেন সভাপতি জীবিত থাকা অবস্থায় তাকে বাদ দিয়ে কাউন্সিল হতে পারেনা। ওটা অবৈধ কাউন্সিল। আর তাছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছাড়া সাধারণ সম্পাদক একায় কিভাবে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করে, সেটা আমার বোধে আসেনা।
সাংবাদিকের এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, নৌকা মার্কা তো দিবেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা, তৃণমূলে দুটি করে কমিটি কে কাকে সমর্থন করবে? তবে আমি আশাবাদী ইউপি নির্বাচনের আগে উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ সাত ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের কমিটির বিষয়ে দলীয় হাইকমান্ড ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিবেন। ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের আওয়ামী কর্মী শরৎ চন্দ্র বলেন সামনে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন, প্রার্থী বাছাই কোন কমিটির মাধ্যমে করা হবে, সেটা নিয়ে ধোয়াশার মধ্যে আছি কেননা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির একটি কমিটি ও সাধারণ সম্পাদকের একটি কমিটি। বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রবীণ রাজনীতিবীদ নজির হোসেন বলেন শেখ সাবের সময় থেকে রাজনীতি করে আসছি অথচ দলে আমার কোন মুল্য নাই, এখন শুনছি ইউনিয়নে দুটি আওয়ামীলীগের কমিটি এখন কোন কমিটি বৈধ আর কোন কমিটি বৈধ নয়, সেটা কেমনে বলি। সবাই নিজেদের বৈধ কমিটির নেতা হিসেবে দাবী করে কিন্তু নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই করবো কিভাবে।
উমর মজিদ ইউনিয়নের যুবনেতা জোবেদুল তালুকদার উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ সাত ইউনিয়নের দুটি করে আওয়ামীলীগের কমিটির বিষয়ে দলীয় হাইকমান্ডের নিকট দ্রুত সমস্যা নিরসনের দাবী জানান। এবিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও শহিদ পরিবারের সদস্য মোঃ আজগর আলী বলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যে কমিটি গুলোর অনুমোদন দিয়েছে সেগুলো বৈধ কমিটি, কেননা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ সভাপতি, যুগ্ন সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের সাক্ষর রয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির অনুমোদিত ইউনিয়ন কমিটিগুলোতে।