রাজারহাটে সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে ভুয়া দলিল সম্পাদনের অভিযোগ
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ২০ জুন, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুড়িগ্রামে রাজারহাট উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মোঃরায়হান হাবীবের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভুয়া দলিল সম্পাদন করা ও নিয়ম বহির্ভূত অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের পাঠকপাড়া গ্রামে হাবিল উদ্দিনের স্ত্রী হাজেরা বেগম গত ২৯/০৯/২০২০ ইং তারিখে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের বিরুদ্ধে ভুয়া দলিল সম্পাদনের লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয় হাজেরা বেগমের তপশীল বর্ণিত নিজ দখলীয় জমির দলিল নং ৬১৫৮-৩৫৫৫-৩০৯৬ আর এস খং নং ৩২৭ সাবেক দাগ ৯৫২, ৯৪৮, ৯৪০ ও ৯৫০ হাল দাগ নং ১২১১ এবং ১২১০ দাগে ৮.৫ শতাংশ জমিতে বসত বাড়ী। আর এস রেকর্ডে যা বাড়ী উল্লেখ আছে। খাজনা পরিশোধিত হওয়া সত্বেও ঢাকায় বসবাসকারী রফিকুল ইসলাম পিতা মৃত খরকু মিয়াজী কে উক্ত তফশীল বর্ণিত জমির ভুয়া মালিক সাজিয়ে জাল কাগজপত্র তৈরি করে গত ১৩-০৭-২০২০ইং তারিখে কবলা দলিল নং ২০১৩/২০ সম্পাদন করেন সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান কবির।
হাজেরা বেগমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম সাক্ষরিত নোটিশ গত ২৮-১০-২০২০ তারিখে বাদী ও বিবাদীকে শুনানিতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুনানির প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আর এম শাখায় পাঠান।
আর এম শাখায় প্রাথমিক তদন্তে রাজারহাট উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২৯/০৩/২০২১ তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পত্র দিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু রহস্যজনক কারনে এখনো বহাল তবিয়তে তিনি তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার সীমাহীন অনিয়মের প্রতিবাদ কেউ করলে উল্টো তাকেই মামলায় ফাসানোর হুমকি দেন। অনিয়ম যেখানে নিয়ম বানিয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীব।
কয়েকজন দলিল লেখক জানান, প্রতি দলিল রেজিস্ট্রারী করার জন্য দুই হাজার করে টাকা দিতে হয়। এছাড়াও ছোট খাটো ভুল ত্রুটির জন্য দুই হাজার সহ আরও অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। আমরা চরম বিপাকে আছি প্রতিবাদ করলেই উল্টো আমাদের ফাসানোর ভয় দেখান।
এবিষয়ে জানতে সাব-রেজিস্ট্রার রায়হান হাবীবের মুটোফোনে একাধিকবার ফোন করে ও ম্যাসেজ দিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে রাজারহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ সোহরাওয়ার্দী বাপ্পী বলেন, ভুক্তভোগী অনেকেই আমাকে তার বিরুদ্ধে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। আমি তাকে আমার অফিসে ডেকে এনে ঘুষ না নিতে ও অনিয়ম বন্ধ করতে অনুরোধ করলেও তা কাজে আসে নাই।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম বলেন, সাব রেজিস্ট্রার আমার অধীনস্থ নন, এব্যাপারে ডিসি মহাদয় বা জেলা রেজিস্ট্রার মহাদয়ের সাথে কথা বলতে বলেন প্রতিবেদককে।