রাজারহাটে শালিস বৈঠক থেকে ধর্ষককে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ায় শালিস পন্ড
রাজারহাট (কুুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ১৯ মে, ২০২০ (বিডি ক্রইম নিউজ ২৪) : রাজারহাটে সালিশ বৈঠক থেকে ধর্ষককে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের ৭২ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও থানায় মামলা হয়নি। অভিযোগ থেকে নিজেদের নাম বাদ দিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ধর্ষকের ভাড়াটে সসন্ত্রাসীরা। অভিযোগ তুলে নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকির অভিযোগও তুলেছেন বাদির পরিবার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ফতেখাঁ কারামতিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক দাখিল পরীক্ষার্থীনীর সাথে উলিপুর উপজেলার কর্পূরা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের পুত্র সেফারুল ইসলাম প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এক পর্যায়ে গত ১৩ মে বিকেলে রাজারহাটের ছাট মল্লিকবেগ বোতলারপাড় বাজার থেকে সেফারুল ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেলে করে তার চাচাতো ভগ্নিপতি উলিপুর উপজেলার সাহেবের কুটি মিয়াপাড়া গ্রামের মেহের আলীর পুত্র রফিকুল ভাংরির বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে সেফারুল। পরে ওইদিন রাতে ধর্ষক সেফারুল ছাত্রীটিকে নিয়ে রাজারহাটের বোতলারপাড় বাজারে আসলে এলাকাবাসী সন্দেহজনকভাবে তাদেরকে আটক করে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে যায়।
এ সময় ধর্ষিতা সমস্ত ঘটনা খুলে বললে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবু মন্ডল উভয় পক্ষকে নিয়ে পরদিন ১৪এপ্রিল রাতে তার বাড়িতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করে। সালিশ বৈঠকে রাজারহাট উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান আশিকুল ইসলাম (সাবু), রাজারহাট সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এনামুল হক ও ইউ পি সদস্য সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ধর্ষক সেফারুল ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।
পরে উভয় পক্ষের লোকজন তাদের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রাজারহাট ইউনিয়নের বিবাহ রেজিস্ট্রারকে (কাজী) আসতে বলেন। এমন সময় বোতলারপাড় ছাট মল্লিকবেগ গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র রফিকুল ও উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের পীরমামুদ গ্রামের ওছমান আলীর পুত্র (কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য) আঃ সালাম এর নেতৃত্বে কয়েকজন ভাড়াটে সন্ত্রাসী লাঠি সোডা নিয়ে শালিস বৈঠকে উপস্থিত হয়ে বিয়ে হবে না বলে বৈঠক থেকে ধর্ষক সেফারুলকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে এঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে মামলা দায়েরের জন্য রাজারহাট থানায় অভিযোগ দাখিল করেন।
এবিষয়ে রাজারহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আশিকুল ইসলাম সাবু মন্ডল ও শালিস বৈঠকে উপস্থিত রাজারহাট সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এনামুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
উল্লেখ্য বোতলার পাড়ের রফিকুল ইসলাম ইতোপূর্বে আলোচিত হিন্দু সম্প্রদায়ের এক স্কুল ছাত্রী গণধর্ষণ মামলার চার্জশিটভূক্ত প্রধান আসামি ছিল বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে রাজারহাট থানার ওসি মোহাঃ রাজু সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন তদন্ত সাপেক্ষে মামলার প্রতিক্রিয়া ধিন চলছে।