রাজারহাটে নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন এলাকাবাসীর
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি, ইব্রাহিম আলম সবুজ, ০৪ আগস্ট, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : রাজারহাটে মঙ্গলবার ০৪ আগস্ট ২০২০ইং সকাল ১১:৩০ মিনিটে গত রমজান মাসে তারাবীহ নামাযের চান্দার ৫০ টাকার জের ধরে আক্কাস আলীর নির্মমভাবে হত্যার দাবিতে জড়িতদের গ্রেফতারের মানববন্ধন ও প্র’তিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ০১ আগস্ট ২০২০ইং তারাবীহ নামাযের চান্দার মাত্র ৫০ টাকার বিনিময়ে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে প্রতিপক্ষের পরিকল্পিত হামলা ও ধারালো অস্ত্রাঘাতে আক্কাস আলীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ৩জন আসামীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে। বাকি মুল আসামিদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
সরেজমিনে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের উমর মজিদ গ্রামের মসজিদে গত বছর রমজান মাসে তারাবি নামাজের ইমাম-মোয়াজ্জিনের বেতন দেয়ার জন্য মসজিদ কমিটি প্রত্যেকের ৩ শত টাকা হারে চাঁদা নির্ধারন করেন। এসময় ওই গ্রামের হতদরিদ্র আতিকুর রহমান (২৫) তারাবির চাঁদা ৩ শত টাকার স্থলে ২ শত ৫০ টাকা প্রদান করলে মসজিদ কমিটির সভাপতি ছাইফুল হাজী টাকা কম নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এনিয়ে একপর্যায়ে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা আপোস মিমাংসার চেষ্টা করলেও প্রভাবশালী ছাইফুল হাজী গং বিষয়টি আপোস করতে অস্বীকৃতি জানায়। এঘটনার পর থেকে এক বছর তিন মাস ধরে আতিকুরের ভাতিজা ঢাকায় কর্মরত রওশন আলি (২৮) ছাইফুল হাজী গং এর ভয়ে পালিয়ে ছিলো। এবারে ঈদুল আযহার পূর্বে সে বাড়িতে আসে।
শনিবার ঈদের দিন রওশন তার চাচা আক্কাছ আলী (৩০) ও ফুফাতো ভাই সুমন (১৮) সহ পার্শ্ববর্তী নাজিমখাঁন ইউনিয়নের রতিরাম পাঠানপাড়া গ্রামে তার বোনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়। সেখানে ওই দিন সন্ধ্যায় ছাইফুল হাজীর ৪পুত্র মিল্টন, মোস্তাক, তারা মিয়া ও চাঁদ মিয়া সহ তার লোকজন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রওশনের উপর হামলা করে। রওশনকে রক্ষা করতে আক্কাছ আলীর (৩০) ও সুমন (১৮) এগিয়ে আসলে আসামীরা ধারালো রাম দা দিয়ে আক্কাছের মাথায় কুপিয়ে এবং সুমনের শরীরের বিভিন্ন অংশ রক্তাক্ত জখম ও গুরুতর আহত করে। পরে তাদের দুজনকে রংপুর সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ আক্কাছ আলীকে মৃত: ঘোষনা করেন। সুমন বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
আজ সেই ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে, সকাল ১১:৩০মিনিটে নাজিম খাঁন ইউনিয়নের রতিরাম পাঠানপাড়া, পাকার মাথায় থেকে দুটি বাস, মোটরসাইকেল সহ অটোরিকশা যোগে মানববন্ধন কর্মসূচিটি উপজেলার নাজিম খাঁন বাজার থেকে রাজারহাটে অবস্থান করে এবং কুড়িগ্রামের উদ্যেশ্যে রহনা হয়। পরে মানববন্ধন কর্মসূচি টি এসপি অফিসে গিয়ে স্বারকলিপি এবং ডিসি অফিসে জমা দিয়ে মুল আসামিদের গ্রেফতার পরোওয়ানা দাবি জানান।
এবিষয়ে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু সরকার জানান, আমরা তিনজন আসামীকে গ্রেফতার করেছি এবং অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশি প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।