মাদারীপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন গুলিবিদ্ধ আহত ১৩
মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ২৭ মে, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের খাদমসী গ্রামে ও রাজৈর উপজেলার পান্থাপাড়া এলাকায় পৃথক সংঘর্ষে ২জন গুলিবিদ্ধসহ ১৩ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ২০টি বাড়িঘর ভাংচুর ও আগুন নিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের খাদমসী গ্রামে ঈদের দিন সন্ধ্যার পর বাড়ীর দিকে আসছিল সিদ্দিক মুন্সি ও তার দুই ছেলে। এসময় ওৎ পেতে থাকা লিটু মুন্সি ও তার লোকজনরা তাদের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে সিদ্দিক মুন্সি বাড়ীতে দৌড়ে চলে আসে। পরে তার বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপরে কয়েকটি বাড়ীতে ব্যাপক তান্ডব চালিয়ে ভাংচুর করে। এতে ইমন মুন্সি, শাহীন মুন্সি, আতাহার খান, রিপন বেপারী, বাবুল তালুকদার, মিরুল তালুকদার, রাজিব তালুকদার, আনোয়ার মুন্সি, তুহিন মুন্সিসহ ২০ জনের বাড়ী ভাংচুর করে। এছাড়া ইউসুফ মোল্লার দোকান ও আতাহার খান এবং শাহীন মুন্সির মটরসাইকেল ভাংচুর করে। হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এব্যাপারে সিদ্দিক মুন্সিকে বলেন, ‘লিটু মুন্সি ও আহাদ মুন্সির হাতে গোটা এলাকা জিম্মি। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করে। তাদের হাত থেকে আমরা মুক্তি চাই।’ ঘটনার পর থেকে লিটু মুন্সি ও আহাদ মুন্সিকে এলাকায় পাওয়া যায়নি। তাদের ব্যবহারিত মোবাইলও বন্ধ পাওয়া গেছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. কামরুল হাসান মিঞা জানান, ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। একপক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়েছে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর ইউনিয়নের উত্তর সীমান্তে পান্থাপাড়া নামক স্থানে মঙ্গলবার বিকেলে ত্রান বিতরন ও এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষে ২জন গুলিবিদ্ধসহ ৮ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে। থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষন দাস নামে এক ব্যবসায়ী ঢাকা থেকে এসে উপজেলার কবিরাজপুর ইউনিয়নের পান্থাপাড়া মোড়ে করোনা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে ত্রান হিসেবে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করছিলেন । এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতানের ভাই কামরুজ্জামানসহ ২০/২৫ যুবক মোটর সাইকেল নিয়ে মহড়া দেয়। এ নিয়ে বাকবিন্ডার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় । এ সংঘর্ষে ২জন গুলিবিদ্ধসহ ৮ জন আহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ দুজন বাদল খোন্দকারকে ঢাকা মেডিকল কলেজ হাসপাতালে এবং মোকা মাতুব্বরকে ফরিদপুর মেডিকল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে। থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ব্যবসায়ী লক্ষন দাস জানান, এলাকাবাসীর আহবানে ত্রান দিতে ঢাকা থেকে এলাকায় আসি এবং ১৪ শত পরিবারের মধ্যে ত্রান বিতরন করি। আরো ৭শত পরিবারের ত্রান আমার গোডাউনে মজুদ রয়েছে। বাঁধার মুখে পড়ে ত্রান বিতরন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মজুদকৃত ত্রান বিতরন করতে পারবো কি না তা নিয়ে আমি শংকিত।
কবিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. টিপু সুলতান জানান, ত্রান বিতরনে বাঁধা দেয়া হয়নি। সদ্য ঢাকা থেকে আসায় তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা নিয়ে বিতন্ডা বাধে।
রাজৈর থানার ওসি তদন্ত আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।