ভয়ংকর রুপে পদ্মা।। টার্গেটে এলাকা সহ বিজিবি ক্যাম্প
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিদিনি, মোঃশাহ্ আলম, ০৯ জুলাই, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাবার সাথে সাথে ব্যাপক আকারে ভাঙন শুরু হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ান ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়ন, উজিরপুর ইউনিয়ন, দুলর্ভপুর ইউনিয়নসহ, বেশ কয়েকটি ইউপির গ্রামগুলোর ভাঙন শুরু হয়েছে, এরি মাঝে মনোহারপুর, আইয়ূব বিশ্বাস পাড়া, চরপাকা, লক্ষীপুর, কাইড়া পাড়া গ্রামসহ দুইশত পরিবারের ঘরবাড়ি পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। চরম হুমকির মুখে রয়েছে বিজিবি ক্যাম্প, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন কমপ্লেক্সসহ আশপাশের শতশত বাড়িঘর, মসজিদ মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আম বাগান ফসলি জমি। স্থানীয় এলাকাবাসী জরুরী ভাবে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন শংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
রবিবার সকালে সরজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকায় যেয়ে দেখা যায় এ চিত্র। স্থানীয় একাধিক পরিবারের সাথে কথা হলে তাঁরা জানিয়েছে, গত ইদুল ফিতরের পর থেকে শুরু হওয়া ভাঙনে গত দুইদিনে প্রায় ২০০ মিটার জুড়ে ভেতরে ঢুকে পড়েছে নদী। গত ৩ দিনের ব্যাপক ভাঙনে প্রায় ১ শ মিটার নদী ভেতরে ঢুকে পড়েছে। বর্তমানে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনস্থ চরবাগডাঙ্গা বিওপি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিওপি থেকে মাত্র ১শ মিটার দূরে অবস্থান করছে নদী। ভাঙনের কবলে পড়ে গত তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে বিজিবি। রবিবার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহেদুল আলম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জস্থ ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল সাজ্জাদ সরোয়ার বলেন, চরবাগডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পটি একটি পাকা স্থাপনার উপর তৈরি। গত কয়েকদিনে পদ্মা নদীর ব্যাপক ভাঙনে চরম হুমকির মুখে পড়েছে। দুয়েকদিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ক্যাম্পটি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে এবং আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি চোরাচালান প্রতিরোধে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করবে। তিনি আরো বলেন, এই বিওপির পাশ ঘেঁষে পদ্মা নদী প্রবাহিত হচ্ছে, একটি দূরেই বিশাল চর, দুয়েকদিনের মধ্যে ভাঙন ঠেকানো না গেলে ক্যাম্পটি বিলীন হয়ে যাবে এবং চোরাচালান প্রতিরোধ করা কঠিন হবে।
ভাঙনের কারণে গত তিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন-ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় ও রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহমুদ মূকুল, চরপাকার মামুন, সেলিম অনেকে জানিয়েছেন, ইত:পূর্বের পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে এলাকার শতশত বিঘা জমি বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়েছে চরপাকা, লক্ষীপুরচর, রামনার্থপুর, মনোহারপুর, রোডপাড়া গ্রামসহ ২০০ টি পরিবারের বসভিটা, জায়গাজমি স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ। এবারও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। যত দ্রুত পারা যায় এর সমাধান করা জরুরী হয়ে পড়েছে।