বগুড়ায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ ফুট মাটির গভীরতায় ভিত্তি দিয়ে ৪ তলা ভবন নির্মান, এলাকাবাসীর ক্ষোভ
বগুড়া জেলা প্রতিনিধি, আবদুল ওহাব, ১৬ নভেম্বর, ২০১৭ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪): বগুড়ার শাজাহানপুরে ২ ফুট মাটির গভীরতায় ভিত্তি দিয়ে চলছে ৪ তলা ভবন নির্মানের কাজ। আর ভিত্তির এ অংশটুকু অতিদ্রুত লোকচক্ষুর আড়াল করতে জোড়েসোরে চলছে মাটির নীচের অংশ ভরাটের কাজ। শুধু তাই নয়, ভবন নির্মান আইন উপেক্ষা করে নির্মান কাজ চালানো হলেও দৃষ্টিতে আসছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বিধায় ঠিকাদার ও প্রকৌশলী যোগসাজসে নামেমাত্র ভবনের কাজ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, উপজেলার ডুমুনপুকুর বাজারে চলছে ৪ তলা ভিত্তি সম্মলিত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মানের কাজ। কিন্তু নির্মানাধীন ভবনের ভিত্তি এতটাই উপরে যে, পাশের ধান ক্ষেতের জমির চাইতেও ভবনের ভিত্তি অনেক উপরে। মাত্র ২ ফুট মাটির নীচে এর ভিত্তি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, প্রকৃত ঠিকাদার (রাসেল) কে কিছু কমিশন দিয়ে তার নিকট থেকে কাজ কিনে নেওয়া হয়েছে। আর স্থানীয় জনসাধারন বলছেন, কমিশনের ভাগবাটোয়ারা করে যা থাকে তা দিয়ে দায়সারাভাবে চলছে এই ভবন নির্মানের কাজ। তাই সকলের চোখের সামনে এমন ধরনের কাজ হলেও দৃষ্টিতে আসছেনা কোন কর্মকর্তার।
উল্লেখ্য ডুমুনপুকুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন থাকা সত্বেও ইতিপুর্বে এধরনের দায়সারা কাজ করে ভবন নির্মান করার ফলে বিল্ডিংটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই ভবনটি ফাটল ধরে ঝুকিপুর্ণ হয়ে পড়ে। পরে সরকার পরিত্যাক্ত ঘোষনা করতে বাধ্য হয়। এ জন্য দীর্ঘদিন ভবন না থাকায় ঐ বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা পাশের একটি মাদরাসায় ক্লাস করে আসছে। এমতাবস্থায় দীর্ঘ প্রায় ১ যুগ পর ভবনের মুখ দেখতে যাচ্ছে স্কুলটি। কিন্তু নবনির্মিত এ ভবনটিকে ৪ তলায় উত্তীর্ণ করার পরিকল্পনা হিসেবে ভিত্তি দেয়ার জন্য সরকার অর্থ প্রদান করেও এধরনের অনিয়ম ও দায়সারা কাজ করায় এই ভবনটির উপর পরবর্তীতে আরও ৩ তলা করা সম্ভব হবেনা। ফলে গচ্ছা যাচ্ছে সরকারের এই বিপুল পরিমান অর্থ।
বগুড়া ভবন নির্মানে দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, মাটির গুনগত মান ও স্থাপনার দৈর্ঘ প্রস্থের উপর বিল্ডিং এর ভিত্তি নির্ভরশীল। আর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৈর্ঘ প্রায় ৮০ ফুট ও প্রস্থ ২৫ ফুটের মত হলে এবং মাটির গুনগতমান ভাল হলে ৪ তলা ভবন নির্মানের জন্য কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ ফুট মাটির নীচে গভীরতা থেকে বিল্ডিংটির ভিত্তি দেয়ার বিধান রয়েছে। তথাপি কেন – মাত্র ২ ফুট মাটির নীচে ৪ তলা ভবনের ভিত্তি দিয়ে নির্মান কাজ করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে শাজাহানপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, এতে কোন অসুবিধা নাই। নিয়ম মেনেই কাজ করা হচ্ছে। তাছাড়া কবে ৪ তলা হবে নাকি হবেনা তা কে জানে।
এভাবে সরকারী ভবন নির্মানে অনিয়ম চোখের সামনে চললেও রহস্যজনক কারনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নীরবতা দেখে তাদের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন জনসাধারন। তাই তারা জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েছেন।