বগুড়ায় নির্যাতনের পর গৃহবধুর মাথা ন্যাড়া, আটক ১
বগুড়া প্রতিনিধি, এম নজরুল ইসলাম, ১৭ এপ্রিল, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নির্যাতনের পর গৃহবধুর মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় বগুড়ার ধুনট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় শাহ আলম (৩৮) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের মাধবডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে ও অভিযুক্ত পাষন্ড স্বামী বকুল হোসেনের বড় ভাই।
মঙ্গলবার বিকেলে ধুনট থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) খান মোহাম্মদ এরফান মামলা দায়ের ও একজনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আসমা খাতুন (২৬) নামে এক গৃহবধুকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে মাদকাসক্ত স্বামী বকুল হোসেন (৩৫)। উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের মাধবডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্বামীর বাড়ীতে জিম্মিদশা থেকে ওই নির্যাতিত গৃহবধুকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে তার স্বজনরা।
স্থানীয়রা জানান, মাধবডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে বকুল হোসেনের সাথে ধুনট সদরপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেনের মেয়ে আসমা খাতুনের প্রায় ৮ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে লিখন ও লিমন নামে দুই ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু গত একবছর যাবত স্বামীর একাধিক বিবাহ, মাদক দ্রব্য সেবনসহ পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে মাঝেমধ্যেই আসমা খাতুনকে নির্যাতন করে আসছিল স্বামী বকুল। গৃহবধু আসমা বিষয়টি বকুলের পরিবারের লোকজনকে একাধিক বলতে গেলে তারা ওই গৃহবধুকে নির্যাতন করে। এ বিষয়ে একাধিকবার গ্রাম্য শালিশ বৈঠক হলেও স্বামী বকুল হোসেন আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
গত ২৮ মার্চ আসমা খাতুনকে বেধরক মারপিটে করে আহত করে পাষন্ড স্বামী বকুল। এক পর্যায়ে নির্যাতিতা গৃহবধুর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। এরপর এক সপ্তাহ যাবত ওই স্ত্রীকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন চালায় বকুল ।
মেয়ের নির্যাতনের খবর শুনে তার পিতা ইসমাইল হোসেন দেখা করতে গেলেও তাকে দেখা করতে দেয়নি বকুলের পরিবার। সোমবার বিকেলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্বামীর বাড়ীতে জিম্মিদশা থেকে আসমা খাতুনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বামীর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে গৃহবধু আসমা খাতুন জানান, স্বামীর একাধিক বিবাহ, মাদক দ্রব্য সেবনসহ কারণে-অকারণে দীর্ঘদিন যাবত স্বামী বকুল হোসেন তাকে নির্যাতন করে আসছে। ২০ দিনে আগে নির্যাতনের পর জোরপূর্বক তার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দিয়েছে। বাপের বাড়িতে কাউকে খবরও পাঠাতে দেয়নি।
এমনকি তার পরিবারের সাথেও দেখা করতে দেয়নি। মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার পর ঘরে আটকে রেখে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে। স্বামীর নির্যাতনের চিহ্ন পুরো শরীরেই রয়েছে জানিয়ে তিনি একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন।
নির্যাতিতা গৃহবধুর পিতা ইসমাইল হোসেন বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমার মেয়েকে উদ্ধার করে ধুনট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি।
ধুনট থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) খান মোহাম্মদ এরফান বলেন, এঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীর বড়ভাই শাহ আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বামী বকুল পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।