বগুড়ায় জেঁকে বসেছে শীত, কাঁপছে মানুষ
বগুড়া প্রতিনিধি, এম নজরুল ইসলাম, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : শীত যেন জেঁকে বসেছে। বইছে হিমেল হাওয়া। দিনের বেলায় সূর্য এলেও তাতে নেই উত্তাপ। সারাদিন হিমেল হাওয়া আর সন্ধ্যার পর কনকনে ঠান্ডায় কাঁপিয়ে তুলেছে ছিন্নমূল মানুষগুলোকে। বগুড়ায় ঠান্ডা বাতাসের সাথে হাড় কাঁপানো শীত শুরু হয়েছে। শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত ও সন্ধ্যার পর কুয়াশায় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচলেও দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুক্রবার রাতে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে চলাচলরত ট্রাকের চালক এনতাজ আলী ও ইসমাইল হোসেন বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪ এর প্রতিবেদককে বলেন, রাতে বেড়েছে কুয়াশার দাপট। কুয়াশার কবলে পড়ে প্রায় প্রতিদিনই ট্রাক উল্টে সড়কের ধারে পড়ে থাকে, ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনাও। কুয়াশার কারণে বাধ্য হয়েই বিভিন্ন বাসষ্ট্যান্ড ও বাজারে বসে বসে সময় কাটিয়ে সকাল হলে ট্রাক নিয়ে গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা দেই।
শীতে মানুষ জড়োসড়ো হয়ে পড়েছে। নিম্ন আয়ের লোকজনের কষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা ফুটপাত এবং গৃহহারা তারা শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শীশুরা সর্দি, শ্বাসকষ্ট, আমাশয় সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পথের ধারে খড়-কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করার দৃশ্য নজর এড়ায় না। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বেড়েছে শীতজনিত রোগ-বালাই। বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া, শিবগঞ্জ, আদমদীঘি, শেরপুর, নন্দীগ্রাম, ধুনট, শাজাহানপুর, সারিয়াকান্দিসহ সবকটি উপজেলার মানুষ শীত নিবারনে শীত বস্ত্রের দোকানে ভীড় করছে।
সরেজমিনের বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফুটপাতে কমদামে শীতের পোষাকের দোকানগুলোতে ভীড় দেখা গেছে। দোকানি হযরত আলী জানান, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে সাতমাথায় ফুটপাতে শীতের পোষাক বিক্রয় করছি। গতবারের চেয়ে এবার অনেক আগেই শীত পড়েছে। পহেলা পৌষ থেকে শীত বেড়েছে, যেকারণে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো ফুটপাতে ভীড় করছেন। পুরাতন পোষাক এক’শ টাকা থেকে শুরু করে নতুন পোষাক ৪শ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রয় করছি।
শহরের সাতমাথার চা দোকানি টুকু মিয়া বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে স্থানীয় এবং অন্যান্য এলাকার মানুষজন রাতের বেলায় বাস থেকে নেমে কনকনে শীতের কবলে পড়ে ফুটপাতের পোষাকে দোকানে ভীড় করছে। উপায় তো নেই, রাতের বেলায় মার্কেট পাবে কোথায় ? রাতের বেলায় ধনী-গরীব সমানতালে ফুটপাতে শীতের পোষাক কিনছে। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা পর্যন্ত জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলায় কুয়াশা লক্ষ্য করা গেছে। রাস্তায় পথচারিও কম ছিল। গ্রামের মানুষগুলো হিমেল হাওয়া, কুয়াশা আর শীতে কাঁপছে।
এদিকে, শীতের শুরুতেই সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নন্দীগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডেরাহার উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে শতশত শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন। এছাড়াও শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাইকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতারণ করেছেন বগুড়া-১ (সোনাতলা-সারিয়াকান্দি) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান।