বগুড়ায় জাপা নেতার পরিবারের উপর এমপি সমর্থকদের হামলা, নারীসহ আহত ৫

বগুড়া প্রতিনিধি, এম নজরুল ইসলাম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) : টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেয়ায় বগুড়ায় জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুর রহমান হাসপাতালে। জাপা নেতার পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সাংসদ নুরুল ইসলাম তালুকদারের বিরুদ্ধে।

জাপার এমপি সমর্থকদের হামলায় বেধরক মারপিট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাপানেতা তৌহিদ (৪৫), তার স্ত্রী মিশু বেগম (৩৫), কন্যা তামান্না (১১) ও বড়ভাই আব্দুল হাই সিদ্দিকী (৫২) সহ পাঁচজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে জেলা জাপানেতা তৌহিদুর রহমান তৌহিদের অবস্থা আশংকাজনক।

বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে দুপচাঁচিয়া উপজেলার বাজারদিঘী হাটসাজাপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। এমপি নুরুল ইসলাম তালুকদারের লোকজন জাপানেতা তৌহিদের ওপর হামলার সময় পরিবারের নারী সদস্যদের বেধরক মারপিট করাসহ শ্লীলতাহারি চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তৌহিদের স্ত্রী মিশু বেগম।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেলা জাপার যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা জাপার সাবেক সভাপতি তৌহিদ জানান, সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেলে জাপার স্থানীয় সাংসদ নুরুল ইসলাম তালুদারের কর্মকান্ড বিষয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছি।

সেটা টিভিতে প্রচারের পর থেকেই এমপি নুরুল ও তার ছেলে প্রিন্স উত্তেজিত হয়ে আমাকে দেখামাত্র হাত-পা ভেঙে ফেলার হৈচৈ করছিল কয়েকদিন ধরেই। একপর্যায়ে এমপির নির্দেশে তার ভাগিনা শিপন, লালিত সন্ত্রাসী মামুন ও রানা সহ প্রায় ১৫/২০জন অস্ত্রধারী প্রকাশ্য দিবালোকে আমার বসতবাড়িতে এসে আমার উপর অতর্কিত হামলা করে।

তৌহিদের স্ত্রী মিশু বেগম জানান, আমার স্বামীকে বেধরক লাথি-ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে খুঁচে হাত ভেঙে দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের মারপিটে জাপানেতা তৌহিদ অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। বাঁধা দিতে গেলে বড়ভাই আব্দুল হাইকে বেধরক মারপিট করে মাটিতে ফেলে ধারালো কুঁড়াল দিয়ে পিঠের ধারে কোপ দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

এসময় তৌহিদের শিশু কন্যা তামান্না চৈতীকেও মারধর করে এমপির লোকজন বীরদর্পে চলে যায়। পরিবারের সকল সদস্যদের মারপিট করাসহ নারী সদস্যদের শ্লীলতাহারি চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ করেন তৌহিদের স্ত্রী। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে আহতদের উদ্ধার বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

তবে অভিযোগ প্রত্যাক্ষান করে স্থানীয় সংসদ সদস্য (জাপা) নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ঘটনার সময় আমি আদমদিঘী উপজেলায় ছিলাম। আমার কোনো লোকজন তৌহিদের পরিবারের ওপর হামলা করেনি। স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এঘটনা ঘটিয়েছে।

তৌহিদ যাদের নাম বলেছে, তারা এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়। তবে কি কারণে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম তালুকদার কোনো মন্তব্য করেননি।

সংসদ সদস্যের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে দুপচাঁচিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাকিল খান বলেন, এই ঘটনার সাথে ছাত্রলীগের নাম জড়ানো সত্যিই দু:খজনক। শিপন, মামুন ও রানা ছাত্রলীগের কেউ নয়।

তবে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক বড়াইগ্রামের শাকিল তালুকদারের সাথে জাপানেতা তৌহিদের দ্বন্দ্ব চলছিল বলে লোকমুখে শুনেছি।

বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক অসীম কুমার রায় বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী এঘটনায় সম্পৃক্ত থাকে, তার বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *