বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানা দালালমুক্ত, মাদক মামলা শতাধিক
বগুড়া প্রতিনিধি, এম নজরুল ইসলাম, ২০ মে, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪): উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড সহ স্কুল-কলেজ পর্যায়ে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি গঠন ও কার্যক্রম শক্তিশালী করায় অভিযোগ নিষ্পত্তি হচ্ছে সহজেই। দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
মাদকের আখড়া হিসেবে পরিচিত বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানায় ২০১৭ সালের জুন মাসে যোগদান করেন পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক। ১১ মাসের কঠোরতায় ১২৩টি মামলায় দুপচাঁচিয়া উপজেলায় মাদক প্রবনতা নেই বললেই চলে। তথ্য পেলে নিজেই সরাসরি অভিযানে যাচ্ছেন তিনি। বড়বড় রাঘববোয়াল মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করায় মাদক প্রবনতা হ্রাস পেয়েছে।
যেকারণে আগের দিনেরমত চুরি-ছিনতাইও নেই। পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বেড়েছে আগের চেয়ে তিনগুন। মাদক, জুয়া এবং ছিনতাইকারীদের সাথে আপোস করেননি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক। অপরাধী যেই, যতবড় ক্ষমতাধর হোক, কাউকেই ছাড় দেননি তিনি। থানাকে দালালমুক্ত করায় সাধারণ মানুষের প্রসংশাও পাচ্ছেন।
সাধারন মানুষের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। আর এজন্যই মাদক ও ছিনতাই রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন দুপচাঁচিয়া থানার এই ওসি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, খুনসহ অধিকাংশ অপরাধই সংঘটিত হয় মাদকের কারণে।
যেহেতু মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য সমাজের জন্য সর্বনাশ ও ধ্বংস ডেকে আনে তাই মাদকমুক্ত দুপচাঁচিয়া উপজেলা গড়তে সবসময় চ্যালেঞ্জিং ও আপোষহীন। এজন্য দায়িত্ব নিয়েই প্রথমে সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছিলেন ওসি আব্দুর রাজ্জাক।
সম্প্রতি বগুড়ায় যোগদান করার পরপরই মাদক ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনা করেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার মো. আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম। অল্প সময়ের মধ্যেই বড়বড় মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করতে সফল হয়েছেন।
জেলার শিবগঞ্জে আলোচিত চার খুনের রহস্য মাত্র ৬ দিনেই নির্ঘূম প্রচেষ্টায় উদঘাটন করায় সর্বত্রই প্রসংশা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে অপরাধীদের তথ্য নিচ্ছেন পুলিশ সুপার নিজেই। এতে তথ্যদাতার পরিচয় ফাঁস হবার সম্ভাবনা নেই।
ডিজিটাল পুলিশ সুপার হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন আলী আশরাফ ভুঞা বিপিএম। মাদক ও ছিনতাইয়ের বিষয়ে পুলিশ সুপার কঠোর থেকে আরো কঠোর। যেকারণে জেলার প্রতিটি থানার ন্যায় দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশের কঠোরতা চোখে পড়ারমত।
থানার একজন দক্ষ এসআই আইয়ুব আলী। তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে আতঙ্ক। এরআগে তিনি যে থানাতেই কর্মরত ছিলেন, সেখানেই বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার ও বড়বড় মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
বগুড়া সিআইডি’র সহকারি পুলিশ সুপার মো. হাসান শামীম ইকবাল যখন বগুড়ার বিভিন্ন থানার ওসি ছিলেন, তখনকার কর্মরত অনেক এসআই এবং এএসআই কঠোর হতে শিখেছেন বলে জানিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার চাকুরী জীবনে অপরাধীদের সাথে কখনো আপোস করিনি। এ উপজেলায় মাদকের কোনো স্পট নেই। দালালমুক্ত থানা গড়েছি। কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম শক্তিশালী করেছি। মাদক ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে জনসচেনতা সৃষ্টি করতে বৈঠক ও সমাবেশ চলমান।