ফেন্সিডিল ও গাঁজা সহ মাদক ব্যবসায়ী চক্রের ৬ সদস্যকে আটক
মাদারীপুর প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : বর্তমানে আমাদের দেশের যুব সমাজের অধঃপতনের অন্যতম প্রধান কারণ মাদকাসক্তি। দেশের যুবসমাজের একটি বড় অংশ আশংকাজনকভাবে মাদক হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবা, গাঁজা ও ফেন্সিডিলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। মাদকের টাকা জোগাড় করার জন্য মাদকাসক্ত যুব সমাজ বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই শ্লোগান নিয়ে র্যাব যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশব্যাপী বিভিন্ন মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারন কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৮, সিপিসি-২, ফরিদপুর ক্যাম্প গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন বাখুন্ডা গ্রাম এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী অবৈধ মাদক দ্রব্য গাঁজা বিক্রয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এ বিষয়ে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্প গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গভীর অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পায়। তদ্প্রেক্ষিতে ২২/১২/২০১৯ইং তারিখ রাতে গোপন উৎস থেকে তথ্য পাওয়া যায় যে, ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন বাখুন্ডা রেলগেইট এলাকায় মাদক দ্রব্য গাঁজা ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।
এ প্রেক্ষিতে ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের একটি বিশেষ আভিযানিক দল ২২/১২/২০১৯ইং তারিখ ২০.৩৫ ঘটিকার সময় ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন বাখুন্ডা রেলগেইটস্থ বনলতা নিরিবিলি হালিম কর্ণার দোকানের সামনে অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী আসামী ১। মোঃ রকিব মোল্লা(২০), পিতা-মোঃ সহিদ মোল্লা, সাং-শংকর পাশা, ০২। মোঃ শাহেদ আলী বেপারী (৩২), পিতা-মৃত ওহাব বেপারী, সাং- সন্তোষী, উভয় থানা- নগরকান্দা, ০৩। মোঃ হাফিজুল তালুকদার (৩২), পিতা- মোঃ রহমান তালুকদার, ০৪। মোঃ সুমন শেখ (২৫), পিতা-মৃত কুদ্দুছ শেখ@বিষু শেখ, উভয় সাং- বাখুন্ডা, উভয় থানা-কোতয়ালী, সর্ব জেলা- ফরিদপুর’দেরকে আটক করে। এ সময় আটককৃত আসামীদের হেফাজতে থাকা ৫০০(পাঁচশত) গ্রাম গাঁজা, মাদক বিক্রিত নগদ ৮০০/-(আটশত) টাকা ও মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে ব্যবহৃত ০৫টি সীমকার্ডসহ ০৪টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে ২৩/১২/২০১৯ খ্রিঃ গভীর রাতে অনুমান ০০.৩৫ ঘটিকার সময় মাদারীপুর জেলার শিবচর থানাধীন কাঠালবাড়ী ঘাট সংলগ্ন ৩নং ফেরীঘাটস্থ মা-বাবার দোয়া নামক হোটেলের সামনে রাস্তার উপর হতে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে একটি মিনি ট্রাক তল্লাশী করে ৭৮৩ (সাতশত তেরাশি) বোতল অবৈধ মাদক দ্রব্য ফেন্সিডিল উদ্ধার করে এবং আসামী ১। মোঃ মাসুম মোড়ল(২৮), পিতা-মোঃ মালেক মোড়ল, ০২। মোঃ ইমন মোল্লা (১৮), পিতা- মোঃ মোস্তফা মোল্লা, উভয় সাং- বসুন্দিয়া, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর’দ্বয়কে আটক করে। এ সময় আটককৃত আসামীদের হেফাজত থেকে মাদক ক্রয়-বিক্রয় কাজে ব্যবহৃত ০৩ টি সিমকার্ডসহ ০২টি মোবাইল ফোন, মাদক বিক্রিত ৪,৭০০/- (চার হাজার সাতশত) টাকা এবং মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ০১টি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়।
আসামীদের নিকট থেকে সর্বমোট ৭৮৩ (সাতশত তিরাশি) বোতল ভারতীয় আমদানী নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল, ৫০০ গ্রাম গুল্ম জাতীয় গাঁজা, মাদক ক্রয় বিক্রয় কাজে ব্যবহৃত ১১টি সিমকার্ড সহ ০৭টি মোবাইল ফোন, মাদক বিক্রিত নগদ ৫,৫০০/- টাকা এবং মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ০১টি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায় যে, ধৃত আসামী ১। মোঃ মাসুম মোড়ল(২৮), পিতা-মোঃ মালেক মোড়ল, ০২। মোঃ ইমন মোল্লা (১৮), পিতা- মোঃ মোস্তফা মোল্লা, উভয় সাং- বসুন্দিয়া, থানা-কোতয়ালী, জেলা-যশোর উক্ত বিপুল পরিমান ফেন্সিডিল বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তাদের হেফাজতে থাকা মিনি ট্রাকে পরিবহন করেছিলো এবং তারা দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ মাদক দ্রব্য ফেন্সিডিল যশোর জেলার বেনাপোল সীমান্তবর্তী এলাকা হতে ক্রয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারী বিক্রয় করে থাকে।
আসামী ১। মোঃ রকিব মোল্লা(২০), পিতা-মোঃ সহিদ মোল্লা, সাং-শংকর পাশা, ০২। মোঃ শাহেদ আলী বেপারী (৩২), পিতা-মৃত ওহাব বেপারী, সাং- সন্তোষী, উভয় থানা- নগরকান্দা, ০৩। মোঃ হাফিজুল তালুকদার (৩২), পিতা- মোঃ রহমান তালুকদার, ০৪। মোঃ সুমন শেখ (২৫), পিতা-মৃত কুদ্দুছ শেখ@বিষু শেখ, উভয় সাং- বাখুন্ডা, উভয় থানা-কোতয়ালী, সর্ব জেলা- ফরিদপুরদের স্বীকারোক্তি মতে জানা যায় উক্ত মাদক দ্রব্য গাঁজা তাদের নিজ হেফাজতে রেখে বিক্রয়ের উদ্দেশ্য ফরিদপুর শহরের দিকে রওনা করছিলো।
উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল, গাঁজা ও অন্যান্য আলামতসহ গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানা এবং মাদারীপুর জেলার শিবচর থানায় পৃথক দুইট মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে ও উক্ত চক্রের অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।