ফরিদগঞ্জে নিরাপত্তা দাবী করে সংবাদ সম্মেলন
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি, কামরুজ্জামান, ১০ জুলাই, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : ফরিদগঞ্জে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কিশোরকে হাজতে প্রেরন, পরিবারের উপর প্রভাবশালী মহলের মদদে হামলা, প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও নির্যাতন থেকে রক্ষা এবং নিরাপত্তার দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরের ভুক্তভোগী পরিবার।
শনিবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরের মা হালিমা বেগম(শান্তি)। বয়স ১৬ হলেও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরকে ১৯ বছর দেখিয়ে চুরির মামলায় জেল হাজতে করেছে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।
লিখিত বক্তব্যে হালিমা বেগম বলেন, ‘গত ১৩ মে ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পুরান রামপুর বাজারের ফ্ল্যাক্সি লোডের ব্যবসায়ী মাসুদ রাঢ়ীর দোকানে ১১ লক্ষ টাকা চুরি হয় বলে অভিযোগ উঠে। ১৭ দিন পর ৩০ মে আমার ১৬ বছরের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে নাজমুল হোসেন ফরহাদকে স্থানীয় কিছু যুবক আটক করে পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার পর ওই দিনই চুরির ঘটনায় মামলা হয়।
ওই ঘটনায় আমার ছেলে নাজমুল হোসেনসহ মোট তিনজন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। যদিও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মামলায় ১৯ বছর দেখানো হয়েছে। নাজমুল প্রতিবন্ধি হিসেবে ডাক্তার ও সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক তালিকাভূক্ত।
হালিমআ বেগম বক্তব্যে বলে, গত ১ জুলাই চুরি হওয়া ১১ লক্ষ টাকা আমার পরিবার ভর্তুকী দিতে হবে, না দিলে মেরে ফেলা, বাড়ি ঘর ভাংচুর ও জ¦ালিয়ে দেয়ার হুমকিসহ তিনদিনের আল্টিমেটাম দেয় মাসুদ রাঢ়ীসহ সন্ত্রাসী চক্রটি। তিনদিন পর ৪ জুলাই মাসুদ রাঢ়ী তার দলবল নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। এই ঘটনায় আমিসহ আমার পরিবারের অন্তত ৭/৮জন সদস্য আহত হওয়াসহ বাড়িঘর ভাংচুর করে।
এসময় জীবন বাঁচাতে আমরা চাঁদপুর পুলিশ সুপার, ফরিদগঞ্জ থানার ওসি ও নিরুপায় হয়ে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে, আড়াই ঘন্টা পর পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পরে আমার পরিবার ও আমার বৃদ্ধ বাবাকে দুই দফা জিম্মি করে রাখে টাকা আদায়ের জন্য।
এ সময় পুলিশ আমাদের সহযোগিতা করলেও পরবর্তীতে আমরা থানায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশের পক্ষ থেকে সহযোগীতা পাইনি। ৩দিন পর আমাদের অভিযোগের কপি ফেরৎ দিয়ে অন্য কোনভাবে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনাটি আমরা ফোনে ফরিদগঞ্জের মাননীয় সাংসদ সাংবাদিক সফিকুর রহমান ও চাঁদপুরের পুলিশ সুপারকেও অবহীত করেছি।
বর্তমানে আমরা সন্ত্রাসী চক্রটির পুন: হামলার আশংকায় আতংকের মধ্যে রয়েছি। আমার কিশোর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে যদি অপরাধী হয়, তাহলে সে নিয়মানুযায়ী শাস্তি পাবে। কিন্তু আমরা কেন হামলা ও ভাংচুরের শিকার হলাম। তাই আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ওই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাচ্ছি। একই সাথে চুরির ঘটনাটিও সঠিক তদন্তের দাবী জানাচ্ছি।
প্রেসক্লাব সভাপতি কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ সময় হালিমা বেগমের স্বামী ফারুক সর্দার, হালিমা বেগমের পিতা বশির উল্ল্যা, মা আশুরা বেগম, ছেলে ইমান হোসেন, আল আমিন সর্দার ও ভাইপো মঈন হোসেন, বোন শিল্পী বেগম উপস্থিত ছিলেন।