ফরিদগঞ্জে টুং টাং শব্দে মুখরিত কামারের দোকান গুলো
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি, কামরুজ্জামান, ০৫ জুলাই, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : মুসলমানের অন্যতম প্রধান উৎসব ঈদুল আযহা, আর এ ঈদকে সামনে রেখে গরু কোরবানীর সরঞ্জাম যোগান দিতে কামার শিল্পীদের দোকান গুলো হাঁপর টানা আর লোহার উপর টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন কামারপাড়া গুলো। ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের। দম ফেলারও সময় নেই তাদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে অবিরাম কাজ করছেন তারা। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার দণ্ড। কেউ পোড়া দা ও ছুরিতে দিচ্ছেন শান। কেউবা হাঁপর টেনে বাতাস দিচ্ছেন।
উপজেলার গুপ্টি ইউনিয়ন, ভাটিয়ালপুর চৌ রাস্তা, চর দুঃখীয়াসহ বিভিন্ন কামার পাড়া ও দোকান ঘুরে দেখা যায়, দা, ছুরি, চাকু ও বটির বেচাকেনা বেড়েছে। তবে কারিগররা অভিযাগ করেন, তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম।
জানা গেছে, এবছর প্রতি পিছ চাকু ১০০-১৫০ টাকা, দা ৩০০-৬০০ টাকা, ৬০০ টাকা কেজি দরে চাপাতি, জবাই ছুরি ৮০০-১২০০ টাকা বিক্রি করছেন। এছাড়াও পুরনোসব যন্ত্রপাতি শান দিতে গুনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। সারা বছর তেমন কাজ না থাকায় অনেকেই বাধ্য হয়ে পৈতৃক এই পেশা পরিবর্তন করছে বলে জানা গেছে।
ফরিদগঞ্জ বাজারের দুলাল কর্মকার জানান, গত বছরে এই ঈদের সময় দিনে ৩ হতে ৪ হাজার টাকা রোজগার হলেও এ বছর সেই তুলনায় বেচাবিক্রি নেই। এ বছর দিনে কত টাকা আয় হয় আপনার এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দিনে মাত্র এক হাজার ১২ শ টাকার রোজগার হচ্ছে, গত বছরের তুলনায় অনেক কম।
বিশ্বজিত কর্মকার জানান, কোরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর দা, ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করেন। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। তাদের আশা, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
খদ্দের রুবেল মেয়া, ইব্রাহিম মিজি, আবুল কালামসহ কয়েকজন ক্রেতা জানান, কোরবানি ঈদের আর মাত্র ৪দিন বাকি। তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার কাজটি সেরে ফেলছি। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বটির দাম একটু বেশি বলে জানান তারা।