নোয়াখালী পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ১৩ জুন, ২০২৪ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালী কবিরহাট বাটইয়া গ্রামে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ উল্যার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে লাশ দাফনের ৩৬দিন পর এক দিনমজুর মো. আলাউদ্দিন (২৬) এর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে কবিরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমৃত দেব নাথের উপস্থিতিতে উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের বাটইয়া গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। এর আগে, গত ১ মে উপজেলার যাদব পুর গ্রামে নরোত্তমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ. কে. এম সিরাজ উল্যার বাড়িতে যুবককে আটকে রেখে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নিহত আলা উদ্দিন উপজেলার বাটইয়া গ্রামের মহি উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনায় গত ৩জুন নিহতের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে নরোত্তম পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ. কে. এম সিরাজ উল্যাকে প্রধান আসামি করে নিশান (২২) ও কবির (৩০) নামে তিন জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা ৫/৬জনকে আসামি করে নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলি আদালতে সি আর মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানার পুলিশ হত্যা মামলা রুজু করেন।
নিহতের বাবা মহিন উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বাড়ির জায়গা নিয়ে সমস্যা হলে নরোত্তম পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ. কে. এম সিরাজ উল্যার কাছে বিচার প্রার্থনা করি। এরপর তিনি নিজেই জায়গাটি ক্রয় করে নিতে চায়। ওই জায়গা নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১ মে রাত ৯টার দিকে চেয়ারম্যান সিরাজ আমার ছেলে আলা উদ্দিনকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। এরপর সেখানে দুইদিন আটকে রেখে তার অনুসারী নিশান ও কবির সহ তারা আমার ছেলেকে লোহাররড, জিআই পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা, হাঁটু, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমকরে। পরে কে বা কাহারা গুরুত্বর আহত অবস্থায় আলা উদ্দিনকে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে ৫মে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চট্রগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। ৬ মে ভোররাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুহয়। ৭ মে তাকে পারিবারিক করস্থানে দাফন করাহয়।
নরোওম পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ. কে. এম সিরাজ উল্যা অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এক সময় তারা জমি বিক্রি করতে চাইছে আমি ক্রয় করিনি। আমি এক একজন জনপ্রতি নিধি আমার কাজ হচ্ছে মানুষের জান মাল রক্ষা করা। আমি কোনভাবেই এই ঘটনার সাথে জড়িত নেই।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের মা আদালতে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত থানায় মামলাটি রুজু করার নির্দেশ দেয়। আদালতের আদেশে তিনজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা রের্কড করা হয়েছে। একই সাথে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তের স্বার্থে কবর থেকে ভিকটিমের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।