নোয়াখালীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোটের মাঠে বরিশাল জেলা প্রশাসনের কর্মচারীরা
নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ১১ জানুয়ারী, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নির্বাচনী আচরণ বিধি লংঘন করে নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রার্থী মো. সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিনের পক্ষে ভোটের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মচারী।
নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে সোমবার রাতে কালেক্টরেট সহকারি সমিতির নোয়াখালী জেলা কার্যালয়ে সদস্যদের নিয়ে লেলিনের পক্ষে ভোট চেয়ে সভা করেন তারা।
সভায় উপস্থিত থাকা কালেক্টরেট সহকারি সমিতির একাধিক সদস্য জানান, সভায় প্রধান বক্ত্যা হিসেবে উপস্থিত থেকে সংগঠনের নোয়াখালীর সদস্যদের ব্রিফিং করেন, বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল এ শাখার উচ্চমান সহকারি ও বরিশাল কালেক্টরেট সহকারি সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান।
এসময় তার ওই দলের বরিশাল জেলা প্রশাসকের চতুর্থ শ্রেণির চার সদস্য উপস্থিত ছিল। এসময় মাহফুজুর রহমান নোয়াখালী পৌরসভার স্বতন্ত্র প্রার্থী লেলিনের পক্ষে ভোট করার জন্য নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের কর্মচারীদের আহব্বান জানিয়ে কিভাবে প্রচারণা করবে তার দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
সূত্র আরও জানায়, বরিশাল জেলা প্রশাসনের উচ্চমান সহকারিসহ চারজনের ওই প্রতিনিধি দল সোমবার দুপুর ২টায় নোয়াখালী আসেন। তারা ওইদিন সন্ধ্যায় নোয়াখালী কালেক্টরেট সহকারি সমিতির বৈঠক করে জেলা সার্কিট হাউজে রাত যাপন করেন। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মচারীদের বাসায় বাসায় গিয়ে ভোটের প্রচারণায় অংশ নেয়ার কথা ছিলো তাদের পরিকল্পনায়।
যোগাযোগ করা হলে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল এ শাখার উচ্চমান সহকারি মাহফুজুর রহমান বলেন, ভোট চাইতে নয়, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ঘুরতে এসেছেন তারা। জেলা শহর থেকে সুবর্ণচর দুর বলায় আর ওইদিকে যায়নি। পরে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা হলে যাস্ট কয়েকজনকে অনুরোধ করেছেন বলেও স্বীকার করেন তিনি।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নোয়াখালী জেলা আ.লীগের আহবায়ক খায়রুল আনম সেলিম বলেন, একজন জেলা প্রশাসক কিভাবে তার অধিনস্থ কর্মচারীদের অন্য জেলায় পাঠায় নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করার জন্য। একজন সরকারি দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন নিন্দনিয় কাজ কেউ আশা করে না। নির্বাচনী আচারণবিধি বর্হিভুত এমন কাজের সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করছি।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন, বরিশাল জেলা প্রশাসন থেকে কোন লোক নোয়াখালীতে এসেছে এমন কোন তথ্য আমার কাছে নেই। বিষয়টি সম্পর্কে খবর নিচ্ছি।
এবিষয়ে জানতে বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সাথে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে মোবাইল প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী লুৎফুল হায়দার লেলিন। তিনি বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার লিপুর ছোট ভাই। আগামী ১৬জানুয়ারি নোয়াখালী পৌরসভায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন বর্তমান মেয়র সহিদ উল্যাহ্ খান সোহেল।
এছাড়া স্বতন্ত্র (আ.লীগের বিদ্রোহী) লুৎফুল হায়দার লেলিন মোবাইল ও বিএনপি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম কিরন কম্পিউটার, শহর বিএনপির সভাপতি আবু নাছের নারিকেল গাছ প্রতীকসহ মেয়র পদে ৭জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।