নোয়াখালীতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলাকেটে হত্যা, গ্রেপ্তার-৪
নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকায় ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে তাসনিয়া হোসেন অদিতা নামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা করা হয়। শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
এ ঘটনায় নিহতের মা রাজিয়া সুলতানা অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় পুলিশ এ ছাত্রীর সাবেক গৃহ শিক্ষক আবদুর রহিম রনিসহ মোট চারজনকে আটক করে। পরে আবদুর রহিম রনি, মো. সাঈদকে ওই মামলায় সন্দেহভাজন দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে এবং অপর দুইজনকে ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তাসনিয়া হোসেন অদিতা ওই এলাকার মৃত রিয়াজ হোসেন সরকারের মেয়ে। সে নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
নিহতের মা রাজিয়া সুলতানা জানান, তিনি সকাল ৮টায় বের হন। স্থানীয় একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি প্রাইভেট পড়ান। ফলে সন্ধা হয়ে যায় বাসায় ফিরতে। বৃহস্পতিবারও সন্ধ্যায় ফেরেন তিনি। ফিরে এসে ঘরের মূল দরজায় তালা দেখতে পান তিনি। তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে সামনের কক্ষের আলমেরিতে থাকা জিনিস-পত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পেলেও অদিতাকে দেখেননি। কিছুক্ষণ পর ঘরের ভিতরের একটি কক্ষ লাগানো দেখতে পেয়ে খুলে ভিতরে প্রবেশ করে বিচানার ওপর অর্ধনগ্ন, গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় অদিতার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এলাকার কিছু বখাটে দীর্ঘদিন ধরে অদিতাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতো। গত কয়েকদিন ধরে অদিতাকে ধর্ষণ করবে বলে বাড়ির সামনে এসে হুমকি দিয়েছে। তিনি ঘরে না থাকার সুবাদে কেউ ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে অদিতাকে ধর্ষণ করে গলা ও হাতের রগ কেটে হত্যা করে ঘর লুটপাট করেছে।
দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপর তিনিসহ পুলিশের একাধিক সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রাতেই এ ঘটনায় সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে আবদুর রহিম রনি নামে ওই ছাত্রীর সাবেক এক গৃহশিক্ষকের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। পূর্ব আক্রোশের জেরেই রনি ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যই মূলত ঘরের আলমিরার জিনিসপত্র তছনছ করা হয় এবং তাকে হত্যা করে।
তিনি আরো বলেন, রনি পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করেছে অদিতাকে। যে কক্ষে অদিতাকে হত্যা করা হয়, সে কক্ষের টয়লেটের পানির টেপ ছেড়ে দেয়া হয়, টেলিভিশনের সাউন্ড হাই করে দেয়া হয়। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটিও নেয়া হয় অদিতাদের রান্না ঘর থেকে।