নরসিংদীর মনোহরদী সরকারি কলেজের শিহ্মার্থী সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত, ফাঁসির দাবীতে মানব বন্ধন
নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি, কে এইচ নজরুল ইসলাম, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নরসিংদীর মনোহরদী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিহ্মার্থী খলিলুর রহমান (১৯) উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়ন নোয়াকান্দী হাজী আলিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান উপভোগ করে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হয়। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এলাকাবাসীদের উদ্যোগে শিহ্মার্থী খলিলুল রহমানের হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফাঁসির দাবি জানান।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিহ্মার্থী খলিলের মৃত্যু হয়। খলিলুর রহমান চন্দনপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মোঃ শাহাদত হোসেনের পুত্র এবং মনোহরদী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ব্যবসায়ী শিহ্মা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিহ্মার্থী। এ ঘটনায় ঐদিনই খলিলের মা লিপি বেগম বাদী হয়ে মনোহরদী থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি নোয়াকান্দী হাজী আলিমুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গিয়েছিল খলিল। অনুষ্ঠান উপভোগ করে বাড়ি ফেরার পথে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা নোয়াকান্দী বাজারের পাশে পৌঁছলে ফলিল একই উপজেলার চন্দন বাড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের কফিল উদ্দিনের পুত্র ইকরাম হোসেন (২১), বাদল মিয়ার পুত্র বুলবুল (২০), আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র নাইম (২২), বিল্লালের পুত্র নিশাত (২১) এবং তাদের সাথে থাকা ৫-৭ জন সহযোগী সন্ত্রাসীরা মিলে খলিলের পথ গতিরোধ করে পূর্ব শত্রুতার জেরে গালাগাল শুরু করে।
এতে সে প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে খলিলের মাথায় আঘাত করে। এতে তার মাথার খুলি বের হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় তার আত্মচিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। এরপরে এলাকাবাসী তাকে গুরুতর আহতস্থায় উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে এবং তার পরিবারকে খবর দেয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা অবনতি দেখে শিহ্মার্থী খলিলকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
সেখানে চারদিন চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ ১৫ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে শিহ্মার্থী খলিল মৃত্যু বরণ করে। নিহতের মা লিপি বেগম বলেন, পূর্ব আক্রোসের জেরে সন্ত্রাসীরা দিন দুপুরে খলিলকে নির্মমভাবে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার দিনই মনোহরদী থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও পুলিশ কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আসামিরা আগেই গ্রেপ্তার হতো। এ ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানাই।
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোঃ আবুল কালাম জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে আগে কেউ অবগত করেনি।আজ মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।