নন্দীগ্রামে সিংজানী মাদরাসায় অতিরিক্ত ক্লাসের নামে চলছে কোচিং বাণিজ্য
বগুড়া (নন্দীগ্রাম) প্রতিনিধি, হেলাল উদ্দিন, ২৭ মে, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সরকারের নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বগুড়ার নন্দীগ্রামে সিংজানী ডি,এস,এস সিনিয়র আলীম মাদরাসায় অতিরিক্ত ক্লাসের নামে চলছে অবাধে কোচিং বাণিজ্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বন্ধের নির্দেশনা দিলেও তা মানা হচ্ছে না।
২০১২ সালের ২০ জুন কোচিং বন্ধের নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা প্রাইভেট পড়াতে পারবে না। তবে তারা নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি সাপেক্ষে অন্য স্কুল, কলেজ ও সমমানের প্রতিষ্ঠানে দিনে সর্বোচ্চ ১০ জন শিক্ষার্থীকে নিজ বাসায় পড়াতে পারবেন। কিন্তু রবিবার সকাল ৯টায় সিংজানী মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায় মাদরাসা শিক্ষকরা কোচিং বানিজ্যের সাথে জড়িত ও দুটি কক্ষে ৭০-৮০ জন শিক্ষার্থীকে কোচিং করাতে বাধ্য করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানায় তাদের কাছ থেকে মাসে ২৫০-৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। স্কুলগুলোতে আলাদাভাবে বিশেষ ক্লাস নেয়ার কথা থাকলেও শিক্ষকরা তা না করে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন।কোচিং চলাকালে আনোয়ার নামের গণিত বিষয়ের শিক্ষকের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিকের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
এদিকে লক্ষ্য করা যায় কোচিং ক্লাসে শিক্ষক আনোয়ার তার ল্যাপটপে অন্য কাজ করছেন। শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের কাছে অধ্যক্ষের ফোন নাম্বার চাইলে তিনি নাম্বার দিতে অস্বীকার করেন এবং এক পর্যায়ে কোচিং ক্লাস থেকে সটকে হারিয়ে যান।
অধ্যক্ষ আঃ মান্নানের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে কথা বলে তিনি মাদরাসায় এসে সাংবাদিকের কোচিং বাণিজ্যের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা ভাল ফলাফলের জন্য দূর্বল ও অমনোযোগী শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ক্লাস করাচ্ছি। এতে কোন ফি নিচ্ছি না। এছাড়া মাদরাসায় কোচিং চলাকালে দেখা যায় কিছু শিক্ষার্থীরা অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার একরামুল হক সরকারের সাথে মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি জানান, সিংজানী মাদরাসায় কোচিং বাণিজ্যের বিষয়টি আমার জানা নেই, তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মাদরাসাটিতে ২০১৮ সালের দাখিল পরীক্ষার ফলাফল ৪৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৬ জন কৃতকার্য এবং ১৮ জনই অকৃতকার্য হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: শারমিন আখতারের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা তিনি জানান কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে ৩১ জুলাই এর মধ্যে কোচিং বন্ধে হাইকোর্ট কে রুল নিস্পত্তি সময় বেধে দিয়েছে আফিল বিভাগ।