দেবিদ্বারে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে গণধর্ষন ঘটনায় আটক ৩ ধর্ষক
কুমিল্লা(দেবিদ্বার)প্রতি নিধি, জি এম মাকছুদুর রহমান, ০২ আগস্ট, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪): কুমিল্লার মুরাদনগর থানার বাবুটিপাড়া গ্রামের রুনা আক্তার(১৬)’নামের এক কিশোরীকে গত ২৯/৭/১৮ তারিখ রাত আনুমানিক ৮:৩০ মিনিটে পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে দেবিদ্বার থানাধীন ভানী ইউনিয়নের খাদঘর গ্রামে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করেছে ৩ বখাটে যুবক।
১/৮/১৮ তারিখ বিকেলে ভিকটিমের মা নুরজাহান(৪৫), স্বামী: জাহাঙ্গির আলম ভিকটিমকে নিয়ে দেবিদ্বার থানায় উপস্থিত হয়ে গণধর্ষনের অভিযোগে খাদঘর গ্রামের আসামী ১। মোঃ আবদুল বাতেন(২৫), পিতা-মৃত শাহ আলম, ২। মোঃ মনির(২৮), পিতা-মোঃ দুধ মিয়া ও ৩। মোঃ আবুল কাশেম(৩৬), পিতা-মৃত আবদুল ওহাবের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার দায়ের করলে ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ সাপেক্ষে মামলা রুজু করে অভিযানে নামে টিম দেবিদ্বার।
অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, এসআই প্রেমধন মজুমদার, এসআই খালেদ মোশারফ, এসআই মোশারফ হোসেন সহ টিম দেবিদ্বার ভানী ইউনিয়নের খাদঘর গ্রামে দ্রুতগতিতে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত উল্লেখিত ৩ আসামীর সকলকেই গ্রেপ্তার করে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত ৩ আসামী অকপটে পালাক্রমে ধর্ষনের দায় স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেয়।
ঘটণার বিবরণে প্রকাশ, গত ২৯/৭/১৮ খ্রীঃ সন্ধ্যার সময় ভিকটিম কিশোরী রুনা(১৬) তার মায়ের উপর রাগ করে মুরাদনগর থানাধীন বাবুটিপাড়া গ্রামস্থ ঘর থেকে চান্দিনা থানাধীন নানার বাড়ীর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর মোবাইল ফোনে কথা বলার সূত্রে পূর্ব পরিচিত আসামী দেবিদ্বার থানাধীন খাদঘর গ্রামের বখাটে যুবক বাতেন(২৫) ভিকটিম’কে ফোন করলে তার রাগ করে বাড়ী ছাড়ার তথ্য জানতে পেরে এ দূর্বলতার সুযোগ কাজে লাগানোর ফন্দি করে।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সে ভিকটিম’কে খাদঘর গ্রামে ডেকে নেয় সে। রাত আনুমানিক ৮ ঘটিকার দিকে ভিকটিম খাদঘর ব্রীজের কাছে পৌঁছলে তাকে কিছুটা দুরে জাহাঙ্গীর চৌকিদারের বাড়ীর পার্শ্বে একটি নির্জন ভরাট জমিতে নিয়ে আনুমানিক ৮.৩০ ঘটিকার দিকে জোর করে ধর্ষন করে বাতেন। রাত আনুমানিক ৯.৩০ ঘটিকার দিকে বাতেন খাবার নিয়ে আসার কথা বলে মেয়েটির কাছ থেকে কৌশলে সটকে পড়ে এবং তার অপর ২ সহযোগী মনির(২৮) ও কাশেম(৩৬) কে ডেকে এনে মেয়েটির কাছে পাঠায়।
আসামী মনির ও কাশেম রাত আনুমানিক ১০.৩০ ঘটিকার দিকে মেয়েটিকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আনুমানিক ১০০/১৫০ গজ দুরে সুরাইয়ার টিনের বসত ঘরে রাত্রীযাপনের জন্য নিয়ে রাখে। সুরাইয়া ঘুমিয়ে পড়লে পাশের কক্ষে প্রথমে মনির এবং পরে কাশেম পালাক্রমে ভিকটিম কিশোরীটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। এ সময় ভিকটিম অনেক কান্নাকাটি ও অনুনয় বিনয় করেও আসামীদের মন গলাতে বা তাকে ধর্ষন করা থেকে নিবৃত্ত করাতে পারেনি। মনির কর্তৃক ভিকটিমকে ধর্ষনকালে আসামী বাতেন ও কাশেম ঘরের বাইরে অপেক্ষায় থাকে।
পরে রাত আনুমানিক ১২টার দিকে মনির ও বাতেন এবং রাত আনুমানিক ১২.৪৫ ঘটিকার দিকে কাশেম ভিকটিমকে ঘটনাস্থল ঘরে রেখে কোথাও যেন যোগাযোগ করতে না পারে তার মোবাইল ফোনটি নিয়ে চলে যায়। পরদিন সকালে সুরাইয়াকে রুনা আসামীগণ কর্তৃক ধর্ষনের শিকার হওয়ার তথ্য জানায়।
পরে সুরাইয়ার চাপে আসামী কাশেম ভিকটিমের মোবাইল ফোনটি ফেরত দিলে ভিকটিম তার ভাবী লাইলীকে মোবাইলে নিজের অবস্থানের সংবাদ দেয়। লাইলী লোকজনের সহায়তায় ভিকটমকে খাদঘর গ্রামস্থ ঘটনাস্থল ঘর থেকে বাড়ী ফিরিয়ে নিয়ে গেলে ভিকটিম তার মায়ের নিকট ঘটনার বিস্তারিত বিবরন দেয়।