দুই হাত দিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে চলে প্রতিবন্ধী মোস্তাফার সুখের সংসার
নরসিংদী প্রতিনিধি, কে.এইচ.নজরুল ইসলাম, ০২ মে, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার, মনোহরদী পৌরসাভার ৭ নং ওয়ার্ডের হাররদীয়া গ্রামের এক কৃষকের ঘরে মোস্তাফা (৩৭) ১৯৮১ সালে জন্ম গ্রহন করেন। ৪ বছর বয়সে মোস্তাফা টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২ পা শুকিয়ে যায়। আর ১০ জন মানুষের চাইতেও সে আলাদা। সে ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষ। হাত পা দিয়ে অন্যদের মত কাজ করার শক্তি নাই। পা`গুলো আকারে খুব ছোট ছোট। কথা বলতে পারে। প্রসাব পায়খানার জন্য স্ত্রী সহযোগিতা করতে হয়।
প্রতিবন্ধি মোস্তফার ২ ভাই ছোট ও ২ বোন সবার বড়। বাবা মারা যায় ১৫ বছর বয়সেই। সম্প্রতি প্রতিবন্ধী মোস্তফার সাথে দেখা উপজেলার মেডিকেল মোড়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালানো অবস্থায়। তার সাথে আমার আলাপচারীতা শুরু হলো। প্রথমে কিছুটা উপরওয়ালার উপর আক্ষেপ। তারপর নিজের কষ্টের কথা। সে আজ ২২ বছর ধরে অন্যের উপর ভরসা করে জীবন-যাপন করছেন না, জীবিকা নির্বাহ করছেন নিজে অটোরিকশা চালিয়ে।
আরোও বলেন, ছোট বেলা হাররদীয়া সঃপ্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করে ভর্তি হয়ে মনোহরদী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ে লেখা পড়ার চলাকালীন বাবা মারা যায় ২ ভাই ২ বোন ও মাকে নিয়ে সংসারের হাল টানটে শুরু হয় প্রতিবন্ধী মোস্তফার জীবন যুদ্ধ। প্রথমে শরু হয় মোদী দোকান দিয়ে তার পর হাঁস মুরগি ও কবুতরের ব্যবসা। ব্যবসায় লাভ কম হওয়াতে শুরু হয় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ।
প্রতিদিন ২ থেকে ৩ শত টাকা রোজগার করে চলে তার সুখী সংসার। ১ মেয়ে ও ১ ছেলে স্কুলে যায়। আর ২ ছোট ভাই ঢাকা কলেজে লেখা পড়া করে আমার রোজগারের টাকা দিয়ে। যা দেই তাই দিয়ে আমরা আদরের ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ চলে।
প্রতিবন্ধী মোস্তাফা সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, দেশে আমার মতো অনেক প্রতিবন্ধী আছে। যারা কর্ম করতে চায় কিন্তু তাদের আর্থিক সমর্থ নাই। সবাই তো আর রিকশা চালাতে পারে না। যে যা করতে পারে সরকার যদি সব প্রতিবন্ধীদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়। তাহলে কোনো এক সময় আর কোন প্রতিবন্ধী ভিহ্মা করবে না।