ডিডি’কে উৎকোচ না দেওয়ায় চাকরি হারালেন
নীলফামারী প্রতিনিধি, মো. শাইখুল ইসলাম সাগর, ১৩ অক্টোবর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নীলফামারী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মারুফ রায়হানকে এক লক্ষ টাকা উৎকোচ না দেওয়ায় চাকরি হারালেন সাধারণ কেয়ারটেকার নুর মোহাম্মদ। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের সদর উপজেলার চাদের হাট রিসোর্স সেন্টারের সাধারণ কেয়ারটেকার পদে চাকরি হারান তিনি।
সোমবার (১২ই অক্টোবর) নীলফামারী জেলা রিপোটার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন নুর মোহাম্মদ ও তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে নুর মোহাম্মদ বলেন, আমি বিগত আট বছর থেকে চাদের হাট রিসোর্স সেন্টারে কেয়ার টেকার পদে কাজ করে আসছি। গত ২০১৮ সালের ২১ই নভেম্বর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের শিক্ষকদের প্রশিক্ষন কর্মশালায় কিছু দুষ্কৃতিকারী আমাকে পরিকল্পিত ভাবে মহাপরিচালকের সামনে অশোভন আচরণ করেন।
বিষয়টি পারিবারিক শত্রুতা বশত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল। বিষয়টি কিছু লোক ওইদিন মহাপরিচালকে জানালে মহাপরিচালক স্যার তৎকালিন ডিডি এরফান স্যারের মাধ্যমে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন এবং পরবর্তীতে আবার মহাপরিচালক স্যারের সাথে দেখা করে মূল বিষয়টি জানাই এবং তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে গত ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট আমাকে চাকরিতে আবার পূর্ণবহাল করার জন্য বর্তমান ডিডি মারুফ রায়হানকে নির্দেশ দেয়।
তিনি আরো বলেন, মারুফ রায়হান স্যারের সাথে আমি দেখা করলে তিনি আমাকে চাকরি পুনরায় ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে দিনের পর দিন সময় পার করছেন। এমত অবস্থায় একদিন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হিসাবরক্ষক মশিউর রহমান বলেন ডিডি’র কাছে তোর বিরুদ্ধে তদন্ত করার দায়িত্ব দিয়েছে তোর পক্ষে তদন্ত রিপোর্ট দিলে চাকরি হবে। এভাবে ঘুরলেতো আর চাকরি হইবে না ডিডি স্যারকে একলক্ষ টাকা দিলে ডিডি স্যার তোর পক্ষে তদন্ত রিপোর্ট পাঠাইলে তোর চাকরিটা আবার হবে।
পারিবারিক অক্ষমতার কারণে আমি ডিডি স্যারকে একলক্ষ টাকা দিতে পারি নি। এরইমধ্যে একদিন হঠাৎ করে গত ১০ই অক্টোবর ডিডি স্যারকে ফোন দিলে তিনি আমাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান। ডিডি স্যারের কাছে অব্যাহতি করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এটি ছাড়া আর কিছুই বলে না।
এমনকি আমার কোনো দোষ ও অভিযোগ ছিল না বিধায় আমাকে চাকরিতে পূর্ণবহাল করার জন্য নীলফামারী আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর ভাই, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মমতাজুল হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলু সহ সুপারিশ করা সত্তে¡ও একলক্ষ টাকার জন্য আমাকে চাকরিতে পূর্ণবহাল করলেন না ডিডি মারুফ রায়হান স্যার।
সংবাদ সম্মেলনে নূর মোহাম্মদ এর স্ত্রী মোসলেমা খাতুন বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার স্বামীর চাকরি পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়ান জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি। আমার স্বামীর চাকরি না থাকায় আমি আমার দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।
সংবাদ সম্মেলনে নূর মোহাম্মদ এর শশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবের আলী, তার দুই মেয়ে মুমতাহিনা আক্তার মুন্নি ও মমতা আক্তার সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।