ডিআইজি মিজানের হত্যার হুমকির রেকর্ড স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে শোনালেন খোকন
ঢাকা, ১১ জানুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ সংবাদদাতা নেসারুল হক খোকন ডিআইজি মিজান তাকে টেলিফোনে হত্যার যে হুমকি দিয়েছেন তার অডিও রেকর্ড স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে শুনিয়েছেন। বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে খোকন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে শুধু এই রেকর্ডই শুনাননি, ন্যায় বিচার চেয়েছেন এবং নিজের নিরাপত্তার নিশ্চিত করা অনুরোধ জানিয়েছেন।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদক নেসারুল হক খোকন এক তরুণীকে অস্ত্রের মুখে জোর করে তুলে এনে নির্যাতন, বিয়ে, ৪ মাস সংসার ও পরবর্তীতে ইকো নামের তরুণীকে অস্বীকার করার চাঞ্চল্যকর সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। তার সংবাদের ভিত্তিতে গণমাধ্যম সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তোলপাড় সৃস্টি হয়। ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার মিজানকে ক্লোসড করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ বিভাগ। নিশ্চিত বিপদের মুখে মিজান নেসারুল হক খোকনকে টেলিফোনে হত্যার হুমকি দিয়ে বসেন। জানা যায়, খোকন এই ঘটনায় আদালতেও মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নেসারুল হক খোকন তার ফেসবুকে লেখেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে হুমকির বিষয়টি অবগত করলাম। এসময় তিনি প্রভাবশালী ওই পুলিশ কর্মকর্তার হুমকির অডিও রেকর্ডও শুনেছেন। বলেছেন, “খোকন টেনশন করবেন না আমি বিষয়টি দেখছি।”
এদিকে, ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এক নারীকে জোর করে বিয়ে ও তার উপর নির্মম নির্যাতনের সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারের জের ধরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) এর সদস্য, ক্র্যাব বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার নেসারুল হক খোকন এবং যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ তুহিনকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ক্র্যাব। পাশাপাশি হুমকিদাতা ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার পদ থেকে সদ্য প্রত্যাহার হওয়া ডিআইজি মিজানুর রহমানের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার এক যুগ্ম বিবৃতিতে ক্র্যাব সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার আলম ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘সংবাদ প্রচার-প্রকাশ করায় পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার (০৯ জানুয়ারি) রাতে দু’জন পেশাদার সাংবাদিককে ফোন করে গুলি করে হত্যার যে হুমকি দিয়েছেন, তা শুধু অপেশাদার আচরণই নয়- রীতিমত ক্ষমতার অপব্যবহার, ধৃষ্টতা এবং সীমা লঙ্ঘনের সামিল।
বিষয়টি প্রচলিত আইনে ফৌজদারি অপরাধ। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকরা যে পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন- এ ঘটনা তার আরেকটি জ্বলন্ত প্রমাণ।’ এছাড়া যে দুই সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ডিআইজি মিজানুর রহমানের লাইসেন্সকৃত ব্যক্তিগত পিস্তলটি পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে এক নারীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোর করে বিয়ে এবং ওই নারীর উপর নির্মম নির্যাতন করার বিষয়ে দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টেলিভিশনে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডিআইজি ওই সাংবাদিকদ্বয়কে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। উৎস- পূর্ব পশ্চিম বিডি/আরআর