চৌদ্দগ্রাম সেপটিক ট্যাংকে মিলল মহিলা লাশ

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, আবদুল মান্নান, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) :কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম শাহিদা বেগম (৬৫) নামে এক নারীর লাশ সেপটিক ট্যাংকি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ ফেরুয়ারি) সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রাম থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ। নিহত শাহিদা বেগম একই গ্রামের মাওলানা আবদুল মমিনের স্ত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মত সোমবার ফজরের নামাজের সময়ে নিহত শাহিদা বেগমের স্বামী মাওলানা আবদুল মমিন স্ত্রীকে নামাজ পড়তে ঘুম থেকে ডাক দিয়ে মসজিদে চলে যান। মসজিদ থেকে তিনি বাসায় ফিরে স্ত্রীকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার সাথে যোগ হয় প্রতিবেশিরা। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করে শাহিদা বেগমকে পাওয়া যায়নি। এ সময়ে ঘরের পিছনের সেপটিক ট্যাংকের কিছুটা দূরে তার ব্যবহৃত জুতো এবং টানাহেচড়া করার দাগ মাটিতে লক্ষ্য করে। জুতো এবং দাগের সূত্র ধরে স্থানীয়রা বাড়ির পাশের একটি সেপটিক ট্যাংকিতে মাথা নিচু করা পা উপরে দিকে উঠানো অবস্থায় শাহিদা বেগমের লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশ গিয়ে সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার করে।

স্বামী মাওলানা আব্দুল মমিন বলেন, আমি ফজর নামাজে ঘর থেকে বাহির হয়ে মসজিদে যাওয়ার সময় আমার স্ত্রী শাহিদা বেগমকে ঘুম থেকে জাগরত করে নামাজ পরার জন্য বলে মসজিদে চলে যাই। যাওয়ার সময় তাকে ঘরের বাহির লাইট বন্ধ করতে এবং গেইটের তালা ঝুলিয়ে দেই। মসজিদ থেকে ফিরে এসে গেইটের তালা খুলে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে দেখি লাইটগুলো জালানো অবস্থায় রয়েছে। ঘরে দরজাও বন্ধ কিন্তু পেছনের দরজাটি খোলা থাকলেও ঘরের ভেতরে আমার স্ত্রীকে পাই নাই। আমি খোজাঁখোজিঁ করে তাকে না পেয়ে প্রতিবেশিদেরকে জানালে তারাসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে আমার স্ত্রীকে খোঁজে পাই নাই। একপর্যায়ে এক প্রতিবেশি আমার স্ত্রীর জুতো এবং তাকে টানা হেচড়ে নেওয়ার দাগ মাঠিতে দেখতে পেয়ে ঘরে পাশের সেপটিক ট্যাংকের কাছে গিয়ে দেখি মাথা নিচু করা এবং পা উপরে দিকে অবস্থা আমার স্ত্রীর লাশ পরে আছে। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

শাহিদা বেগমের মেয়ের জামাতা মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমার শ্বশুরদের সাথে তার ভাইদের জায়গা সম্পত্তির বিষয় দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এই নিয়ে এলাকাতে একাধিক সালিশ দরবার হয়েছে। তারা আমার শ্বশুরদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। আর সকালে সেপটিক ট্যাংকে আমার শাশুরির লাশ পাওয়াটা রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। তাকে কেউ পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাহিদা বেগমের লাশ সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়। তবে কীভাবে তাকে হত্যা করে হয়েছে ময়নাতদন্তের রির্পোট হাতে পেলে জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *