চৌদ্দগ্রাম মা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করে কিশোর ভাতিজা

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, আবুদল মান্নান, ০৫ জুলাই, ২০২৩ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মায়ের প্ররোচনায় প্রবাসীর ঘুমন্ত স্ত্রী-পুত্রকে কুপিয়ে, ছুরিকাঘাতে, পিটিয়ে হত্যা করেছে ভাতিজা। গত রাত আড়াইটায় উপজেলা সদরের পাঁচড়া বেপারী বাড়িতে মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন পৌরসভার পাঁচরা গ্রামের ডুবাই প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নিপা আক্তার (২৭) ও তার আট বছর বয়সী শিশুপুত্র আলী আহসান মুজাহিদ। পুলিশ মা ছেলের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘাতক মাদ্রাসা পড়ুয়া শাহেদ (১৪) ও তার ভাই শুভকে থানায় নিয়ে এসেছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে স্থানীয়রা জানান, হত্যাকান্ডে অংশ নেয়া শাহেদ স্থানীয় পাঁচরা হোসাইনিয়া ক্বাওমী মাদ্রাসায় হেফজে কুরআনে অধ্যয়নরত। চাচাদের সাথে পুরনো ঘর এবং জমিজামা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধকে কেন্দ্র করে একাধিকবার চৌদ্দগ্রাম থানায় এবং সামাজিক ভাবে বিচার শালিষ বসে। শাহেদ এবং শুভর মা ফাতেমা বেগম এসব দ্বন্ধ নিয়ে ছেলেদেরকে চাচা-চাচিদের বিরুদ্ধে নানান কথা বলে উত্যক্ত করতো। এমনকি অপর চাচা-চাচি তাদেরকে মেরে ফেলবে, বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দিবে বলে বিভিন্ন সময়ে শাহেদকে ক্ষিপ্ত করে তুলতো। প্রতিনিয়ত মায়ের প্ররোচনায় কিশোর শাহেদ মানসিক ভাবে চাচি নিহত নিপা আক্তারের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

নিহত নিপা আক্তারের পিতা জালাল আহমেদের অভিযোগ, তার মেয়ের জামাই আনোয়ার হোসেনের ভাইয়ের ছেলে মঈনুল হাসান শুভ (২২) ও শাহেদ (১৪) এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। আনোয়ার হোসেনের সাথে তার ভাই মঈনুল হোসেন শুভ এর পিতা মীর হোসেনের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। পূর্ব থেকে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৯টায় নিপা আক্তার ছেলে আলী আহসান মুজাহিদকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মামা শ্বশুর আজিজুল ইসলামের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায়।

ধারণা করা হচ্ছে, এ সুযোগে হত্যাকারী ঘাতক ঘরের ভিতর প্রবেশ করে নির্মানাধীন টয়লেটে লুকিয়েছিল। রাতে ঘরে ফিরে নিপা ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে আনুমানিক আড়াইটার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে, ছুরিকাঘাতে তাদের গুরুতর জখম করে। এসময় চিৎকার শুনে লোকজন ছুটে এসে মুজাহিদ ও তার মা নিপা আক্তারকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত ডাক্তার নিপাকে মৃত ঘোষনা করেন এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলী আসান মুজাহিদকে ঢাকা নেয়ার পথে মারা যায়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, মা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার খবর পেয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় আপাতত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই ভাই শাহেদ ও শুভকে থানায় আনা হয়েছে। এএসপি সার্কেল জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম হত্যার সাথে জড়িতদের শনাক্তের জন্য কাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *