চৌদ্দগ্রামে ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মুখে ফুটলো আনন্দের হাসি
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, আবদুল মান্নান, ২২ মার্চ ২০২৩ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : অন্যের ঘরে নিজের জন্ম। সন্তানের জন্মও অন্যের ঘরে। দীর্ঘ ১০ বছর পর নিজের নামে তিনিই কিনা পেলেন জমির দলিল ও ঘরের কাগজ! তাই উচ্ছবাস যেন কমছে না দিন মজুর দিপালী রাণী দাস। বাড়ির তার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ২নং উজিরপুর ইউনিয়নের বলহরা গ্রামে। অভাব অনটনের সংসার। থাকতেন বাড়া বাসায়। স্বামী ও তার প্রতিদিনের আয় দিয়ে থাকতো বাড়ি ভাড়া সন্তানদের খাওয়ন জুটে না। নতুন পাওয়া ঘর ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে বললেন, আধা পাকা ঘরটি তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে। থাকার কক্ষের সঙ্গে রান্নাঘর। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভালো। বিদ্যুৎ আছে। পানি আছে। পরিবার নিয়ে এখন খুব ভালোভাবে থাকতে পারবেন। বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম চলমান রয়েছে।
চৌদ্দগ্রামে প্রান্তিক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২২ মার্চ ২০২৩ তারিখ বুধবার ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ও ৪র্থ পর্যায়ের নির্ধারিত গৃহসমূহ উপকারভোগী পরিবারের নিকট জমিসহ হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন। ইতোমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে ভূমিহীন-গৃহহীন ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় এনেছেন। সারাদেশে আগামী ২২ মার্চ ২০২৩ খ্রি: তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ৩৯,৩৬৫টি ঘর প্রদান করা হবে এবং ৭টি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে (চৌদ্দগ্রামসহ) ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষনা করা হবে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সর্বমোট ৪৪৪টি ঘরের মধ্যে ইতোমধ্যে ৩২০ টি গৃহ উদ্বোধন করা হয়।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, কুমিল্লা জেলাপ্রশাসক, সার্বিক নির্দেশনায় এবং জনপ্রতিনিধিগণকে সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ও ৪র্থ পর্যায়ের সর্বমোট ১২৪টি গৃহ উদ্বোধন করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষনা করা হবে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী মোঃ তানভীর হোসেন জানান, উদ্বোধনযোগ্য ১২৪টি ঘরের মধ্যে শুভপুর ইউনিয়নে ২০টি, জগন্নাথদিঘী ইউনিয়নে ০৭টি, চিওড়া ইউনিয়নে ১১টি, গুনবতী ইউনিয়নে ০৩টি, শ্রীপুর ইউনিয়নে ০৭টি, বাতিসা ইউনিয়নে ১৫টি, ঘোলপাশা ইউনিয়নে ০৫টি, উজিরপুর ইউনিয়নে ০৮টি, কাশিনগর ইউনিয়নে ২০টি, মুন্সিরহাট ইউনিয়নে ০৫টি, আলকরা ইউনিয়নে ১০টি, কালিকাপুর ইউনিয়নে ১৩টি ঘর রয়েছে। সকল পরিবারকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, চৌদ্দগ্রাম ও জেলাপ্রশাসক, কুমিল্লা কর্তৃক স্বাক্ষরিত সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়াও সকল উপকারভোগীকে সরকারী খরচে কবুলিয়ত দলিল সম্পাদন ও নামজারি সম্পন্ন করে খতিয়ান সরবরাহ করা হবে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে গ্রামবাংলার প্রান্তিক ভূমিহীন পরিবারকে দুই শতাংশ করে খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে বরাদ্দ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে সমবায় ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের সুপেয় খাবার পানি ও নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ সম্ভাব্য সব সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।