চৌদ্দগ্রামে এক সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি, মোঃ আবদুল মান্নান, ২৯ মে, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের জামমুড়া গ্রামে ফাহিমা আক্তার (২১) নামে এক সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ফাহিমা ওই গ্রামের ওয়াসিম আকরামের স্ত্রী ও সদর দক্ষিণ উপজেলার পশ্চিম জোড়কানন ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া গ্রামের আলী নোয়াজের মেয়ে। থানা পুলিশ ফাহিমার লাশ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে ফাহিমার লাশ বাবার বাড়ি সাতবাড়িয়া গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফাহিমার স্বামী ওয়াসিম আকরাম ঢাকায় একটি কম্পিউটার দোকানে চাকুরী করে। লকডাউন থাকায় দীর্ঘদিন সে বেকার জীবন অতিবাহিত করছে। বৃহস্পতিবার সকালে ফাহিমা ঈদ উপলক্ষ্যে তাঁর বাবার বাড়ি যেতে স্বামী ওয়াসিম আকরামের কাছে আবদার করে। কিন্তু ওয়াসিম খরচের টাকা না থাকায় শ্বশুড় বাড়ি যেতে রাজি হয় নি। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বিকেলে ফাহিমা আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ফাহিমার নয় মাস বয়সী ইরফান হোসেন নামে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তবে পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় ঝগড়া লেগে থাকতো বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এদিকে ফাহিমা আক্তারের মৃত্যু নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।
ফাহিমার চাচা মোঃ ফরহাদ অভিযোগ করেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে ফাহিমাকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাঁর স্বামী ওয়াসিম আকরাম মারধর করে। এরপর বিকেলে জানানো হয় ফাহিমা মারা গেছে’। অপরদিকে ফাহিমার স্বামী ওয়াসিম আকরামের দাবি, বিকেলে শয়ন কক্ষের দুটি দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে ফাহিমাকে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করা হয়। কোন সাড়া না পেয়ে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে দেখা যায় তাঁর স্ত্রী ঘরের ভূতুরের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে। তাঁর চিৎকারে আশ-পাশের লোকজন এসে ফাহিমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়’।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোশারফ হোসেন লিটন বলেন, ‘ফাহিমার লাশটি ঘরের ভুতুরের সাথে ঝুলে থাকতে দেখা গেছে। তবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে সেটা জানা যায়নি’।
এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই আবদুল মজিদ বলেন, ‘লাশটি উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে কিভাবে মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে’।