গবেষণা উন্নয়নে অনন্য নোবিপ্রবি
নোয়াখালী প্রতিনিধি, বিধান ভৌমিক, ১৭ জানুয়ারী, ২০২২ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) একাডেমিক গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও ভৌত অবকাঠামোর সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে অগ্রসর হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে তাদের এমনভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে করে এখানকার শিক্ষার্থীরা সমাজ-রাষ্ট্রের প্রতিটি দিকে নেতৃত্ব দিতে পারে। নোবিপ্রবি শিক্ষকরা নিরাসক্তভাবে সত্যের সন্ধানে ব্রতী হয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক নতুন নতুন গবেষণা ও অনুসন্ধান কার্যক্রমকে এগিয়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি এখানকার ১১ শিক্ষক পেলেন বিশ্বসেরা গবেষকের পুরষ্কার।
নোবিপ্রবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গেলো বছর প্রায় তিনশটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে গবেষণা পত্র প্রকাশের মান বেড়েছে। এর স্বীকৃতি স্বরুপ দেশের গবেষণায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করে নোবিপ্রবি। এছাড়া সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১২তম অবস্থানে রয়েছে উপকূলের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।
সাতজন শিক্ষক এবং ৯৭ জন শিক্ষার্থী জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ২০২১-২২ এর জন্য মনোনীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণা প্রকল্পের জন্য জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই ফেলোশিপ প্রদান করে। দেশে বিদেশের র্যাকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচক এগিয়ে যাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলো, গবেষণা, ফান্ডিং এবং অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি। সে লক্ষ্যে নোবিপ্রবি প্রতিবছর গবেষণা ব্যয় বৃদ্ধি করছে এবং গবেষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নিয়মিত গবেষণা জার্নাল প্রকাশ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জার্নালগুলোকে কীভাবে স্কোপাস ইনডেক্স জার্নালে উন্নীত করা যায়, সে বিষয়টির গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে গবেষণার বরাদ্দ বাড়ানো, গবেষণায় অগ্রগতি দেখার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে নোবিপ্রবি রিসার্চ সেলকে আরও বেশি কার্যকর করে তোলা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাডেমিক মানোন্নয়নে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গেও এর শিক্ষা সমন্বয় কার্যক্রম এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
সর্বাঙ্গীন কার্যক্রমকে প্রসারিত করার কাজটি সততা, মেধা ও নিষ্ঠার সঙ্গে যিনি পরিচালনা করছেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. দিদার-উল-আলম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এগিয়ে যাওয়া শুধু প্রচলিত অর্থে শিক্ষাদান কিংবা পঠন-পাঠনে নয় বরং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন জ্ঞান ও গবেষণার উন্নয়ন করা। যার মাধ্যমে একটি উন্নত জাতি ও আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূরণ করা যায়।
উপাচার্যের যোগদানের পর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর বর্তমান প্রাগ্রসর বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও আধুনিক জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণে তিনি গবেষণার পাশাপাশি ভৌত উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন।
তাঁর সময়কালে ইতিমধ্যে একাডেমিক ও ল্যাব ভবন, শহিদ ক্যাডেট সার্জেন্ট রুমী ভবন, হলসমূহ, প্রভোস্ট কোয়াটার, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কোয়াটার, মেডিকেল সেন্টার, মসজিদ এবং ত্রিধর্মী উপাসনালয় নির্মাণ ও সম্প্রসারণ কাজ সম্পাদিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুম, সেমিনার রুম, রিডিং রুম, ইন্টারনেট ও পরিবহন সুবিধা, নেট ফ্যসিলিটি বৃদ্ধিসহ নানা উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য : এ বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনা ল্যাব ক্রান্তিকালে বৃহত্তর নোয়াখালী বাসী সহ দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে। একশ এক একর ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত নোবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছয়টি ফ্যাকাল্টি, দুইটি ইনস্টিটিউট ও ২৮ টি বিভাগ রয়েছে। প্রায় আট হাজার মেধাবী শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নে ভবিষ্যত কর্মসূচি প্রস্তাবিত ‘শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ এবং ‘ইনস্টিটিউট ফর ওশানোগ্রাফি এন্ড মেরিন রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট” শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।