কোটি টাকার রাস্তা নির্মানের দেড় মাসেই তছনছ
ঝিনাইদহে সওজের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন জনরোষে সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাকিব
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ০৫ জুলাই, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : কোটি টাকার রাস্তা রক্ষনাবেক্ষন কাজে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের চরম দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে ভূক্তভোগি নাগরিক সমাজ। বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই মোড় ও হাসান ক্লিনিকের সামনে এ কর্মসূচী পালিত হয়।
এলাকার কয়েক’শ মানুষ ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে কর্মসুচিতে অংশ গ্রহন করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে ঝিনাইদহ সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নাজমুস সাকিব উপস্থিত হলে জনতার রোষে পড়েন। এ সময় একজন সাংবাদিক তাকে নাজেহাল হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেন। পরে তিনি অফিসে ফিরে গিয়ে অফিসের কেনা ইট পাথর দিয়ে বড় বড় গর্ত ভরাটের উদ্যোগে নিলে জনগন প্রতিহত করেন এবং সওজের গাড়ি ফিরিয়ে দেন।
এদিকে মানববন্ধন কর্মসুচি শেষে সওজের দুর্নীতিবাজ নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তানভির আহম্মেদ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নাজমুস সাকিব, কার্যসহকারী কাজী আতিয়ার রহমান ও ঠিকাদার আমিরুল ইসলামের শাস্তির দাবীতে পাগলাকানাই মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় ঝিনাইদহ জেলা কৃষক লীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা মাসুদুর রহমান, স্থানীয় দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান, সাধারন সম্পাদক রাজু আহম্মেস পল্টন, ঝিনেদা আঞ্চলিক ভাষা গ্রুরুপের সাব্বির আহমদ জুয়েল, মাহমুদুর আল হাসান সাগর, ব্যবসায়ী তাপস দত্ত, সাজেদুর রহমান, মস্তাফিজুর রহমান, সাখাওয়াত হোসেন ও আরিফ হাসানসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।
বক্তাগন বলেন, ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ হামহদ আরাপপুর বিকল্প সড়কের ৫৩৭ মিটার ও ১৮০০ মিটার রাস্তা জরুরী ভাবে মেরামতের জন্য এক কোটি টাকা টেন্ডার আহবান করেন। ১০% লেস দিয়ে গত ১৪ মে খুলনার শহীদ এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্স নিয়ে শৈলকুপার ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম কাজটি শুরু করেন। শুরু থেকেই তিনি ঘাপলাবাজীর আশ্রয় নেন।
জুনের আগেই তিনি যেনতেন ভাবে কাজ শেষ করে ৮৯ লাখ টাকা তুলে নেন। কিন্তু মেরামতের ১ সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন ও পাথর উঠে আগের চেয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। বর্ষা মৌসুমে ওই সব জায়গায় ৫০ ফুট লম্বা বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোটি টাকার রাস্তা মেরামত নিয়ে খবর বের হলে ঠিকাদার আমিরুল ইসলাম গতকাল এক লাখ টাকা অফিসে দিয়ে যান রাস্তা মেরামত করার জন্য।
কিন্তু সওজের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নাজমুস সাকিব ও ওয়ার্ক এসিসট্যন্ট কাজী আতিয়ার ঠিকাদারের টাকা পকেটস্থ করে অফিসের টাকায় কেনা পাথর দিয়ে রাস্তা মেরামত করার চেষ্টা করছেন। নিয়মানুয়ায়ী কার্যাদেশ প্রদানের এক বছরের মধ্যে রাস্তা রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ঠিকাদোরের। কিন্তু ঝিানাইদহ সওজ তা না করে নিজেটের অফিসের টাকায় ভাঙ্গাচোরা মেরামত করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
বিষয়টি নিয়ে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তানভির আহম্মেদ ফোন রিসিভ করেনি নি। তবে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ নাজমুস সাকিব বলেন, এই কাজ থেকে আমি ঠিকাদারের কাছ থেকে কোন আর্থিক সুবিধা গ্রহন করিনি। তিনি বলেন, রাস্তার পাশে ড্রেন না থাকায় রাস্তায় পানি জমে দ্রুত নষ্ট হয়েছে।