আমরাও সশস্ত্র হব অজস্র মৃত্যুতে : কাদের মির্জা
নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূংফুল হায়দার চৌধুরী, ২২ এপ্রিল, ২০২১ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জে রক্তপাত বন্ধে প্রস্তাব দেওয়ার একদিন পর নিজের অনুসারী রাজু নামে এক স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা গ্রেপ্তার হওয়ায় ফের ফেইসবুক লাইভে এসে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অজস্র মৃত্যুতে সশস্ত্র হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
কাদের মির্জা লাইভে এসে তার নেতা কর্মিদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি শান্তির প্রস্তাব দিয়েছি। আমি আজকে দিন দেখব, আজকে দিন দেখার পরে, আগামী দিন তোমাদেরকে সিদ্ধান্ত দেব। সেই সিন্ধান্তের আলোকে রাজ পথে আমিও থাকব। আমি দেখব কোথাকার পুলিশ, প্রশাসন কি জিনিস। আমি দেখব। প্রয়োজনে জেলে যাব, জীবন উৎসর্গ করব। আমি আর ছেড়ে দেবনা।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টায় তার অনুসারী স্বপন মাহমুদের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের মির্জা বলেন, আমার ছেলেকে এভাবে আহত করার পর এরা কিভাবে থানায় বসে মিটিং করে। সারা দিন রাত তারা সেখানে মিটিং করে, আড্ডাবাজি করে। প্রত্যেকটা ছেলের হাতে অস্ত্র। অস্ত্র নিয়ে তারা থানায় যায়। অস্ত্র নিয়ে ওসির সামনে বসে থাকে। এ অবস্থা যদি চলতে দেয়। আমরাও বসে থাকব না। আমরা ও সশস্ত্র হব অজস্র মৃত্যুতে।
উল্লেখ্য, এর আগে গতকাল বুধবার (২১ এপ্রিল) ভোর পৌনে ৫টার দিকে তার অনুসারী স্বপন মাহমুদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জে আ.লীগের দুই গ্রুপের বিবদমান দ্বন্দ্বে রক্তপাত বন্ধে কয়েকটি প্রস্তাব রেখে ছিলেন। আবদুল কাদের মির্জার প্রস্তাবনাগুলো হলো, নোয়াখালীর যে সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরপেক্ষতা হারিয়েছে কোম্পানীগঞ্জ থেকে তাদের সরিয়ে অস্ত্রের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। সাংবাদিক মুজাক্কির ও সিএনজিচালক আলাউদ্দিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রশাসনের তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত বিচার শুরু করতে হবে এবং তাদের পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।
ছেলে মির্জা মাশরুর কাদের তাশিকের ওপর হামলার ঘটনায় সরকার এবং প্রশাসনের কাছে বিচারের জোর দাবি জানান। গত তিন মাসের ঘটনায় যারা মামলা করুক না কেন, রাজনৈতিক কারণে মামলায় অনেককে জড়ানো হয়েছে। সেই মামলাগুলোতে সঠিকভাবে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। কোনো পুলিশের ওপর কেউ যদি আক্রমণ করে থাকে সেক্ষেত্রে পুলিশ যদি মসজিদে বসে বলেন আমাদের এ লোকটা আক্রান্ত হয়েছে তাহলে আমরা যেকোন ব্যবস্থা মেনে নেব। এখানে ষড়যন্ত্র করে অর্থের বিনিময়ে পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বিএনপি-জামায়াত এলাকাছাড়া। আবার তারা ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগ এলাকাছাড়া ও মামলা হামলার শিকার। এ সংস্কৃতি বন্ধ করে সহাবস্থানের রাজনীতি চালু করতে হবে। কোম্পানীগঞ্জের আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। কোম্পানীগঞ্জে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করে এখানে সুন্দর পরিবেশ সরকার ও প্রশাসনকেই সৃষ্টি করতে হবে। আমি দল থেকে ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছি। এ প্রশ্নে কোনো আপোস নেই। আমি ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবও না।
তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জে গত তিন মাসে যারা নৈপথ্যে থেকে অস্থিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে। পৌরসভা নির্বাচন শেষে শপথ নিতে যাওয়ার পথে দাগন ভূঁঞায় আমার ওপর হামলার বিচার হতে হবে।