১লা জানুয়ারি চালু হচ্ছে ফেসবুকের বিকল্প মেভবুকের

মাদারীপুর প্রতিনিধি, আরিফুর রহমান, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন “বাঙালী জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না!” আসলেই কেউ পারে নি। সেই শূন্য থেকে শুরু। আজ বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এশিয়ান টাইগার হবার পথে। তবে শুরুটা এত সহজ ছিল না। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজকের এই অবস্থান। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে অর্থনীতিতে আজ আমরা বিশ্বের রোল মডেলে পরিণত হয়েছি।

বাংলাদেশকে ইন্টারনেট জগতে স্বনির্ভর করার জন্য এগিয়ে এসেছে একঝাঁক উদ্যমী  তরুণ। বাংলার এ দামাল ছেলেরা প্রতিষ্ঠা করেছে ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানি। তার নাম মেভবুক প্রাইভেট কোম্পানি  লিমিটেড।
বাংলাদেশকে ভার্চুয়াল জগতে স্বনির্ভর করা। যাতে করে অর্থনৈতিক দৌড়ে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে আরও একধাপ এগিয়ে যায় এবং দেশের টাকাগুলো বিদেশে না যায়। কারণ গ্লোবালাইজেশনের ফলে মানুষ এখন অনেক বেশি ইন্টারনেট মুখি হচ্ছে। একারণেই বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্রগুলো এক ধরনের  প্রচ্ছন্ন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে যে ইন্টারনেট ব্যাবহার করে কারা কত বেশি টাকা ইনকাম করতে পারে।
ফেসবুক 2019 সালে শুধু বাংলাদেশ থেকেই 12 হাজার কোটি টাকা ইনকাম করেছে। এভাবেই তারা প্রতি আড়াই বছরে আমাদের কাছ থেকে একটি পদ্মাসেতুর টাকা নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া টিক টক ইনস্টাগ্রাম হোয়াটসঅ্যাপের মত অ্যাপস গুলো বাংলাদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশেরও ভার্চুয়াল জগতে স্বনির্ভর হওয়া উচিত। যেন বাংলাদেশের কারোর দ্বারস্থ না হতে হয়। এ ক্ষেত্রে তারা উদীয়মান অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীনকে আইডল হিসেবে বেঁছে নিয়েছে। কারণ চীনে রয়েছে ‘চীনা ফেসবুক’ খ্যাত উইচ্যা‌ট। চীনের ইন্টারনেট জগতে উইচ্যাটের ম‌তো আর কোনো কিছুর এতো গুরুত্ব নেই।
মেভবুক কোম্পানি Mevbook এ্যপসকে বাংলাদেশী ফেসবুক বা বাংলাদেশী উইচ্যাটরূপে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। Mevbook এর নিজস্ব মেসেঞ্জারের নাম Mevmanager।
একইভাবে গুগলও বন্ধ চী‌নে। সারাবিশ্বের মানুষ যেখানে তথ্যভান্ডার হিসেবে গুগলে খোঁজে। সেখানে চীনারা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন বাইডু। মেভবুক কোম্পানি ‘বাংলাদেশী গুগল হিসেবে’ MevAsk নামে সার্চ ইঞ্জিন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।
বহির্বিশ্ব বা চীনের ভেতরে ই-কমার্স সাইট হলো আলিবাবা। এটি এত জনপ্রিয় যে অ্যামাজন কোম্পানির এখানে ঠাঁই নেই। মেভবুক কোম্পানি Mevmart নামে দেশীয়, জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট প্রতিষ্ঠা করছে।
এছাড়া লাইকি,টিকটকের মত বিদেশি এ্যপসকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দেশীয় ভিডিও শেয়ারিং এ্যপস Mevjup  নির্মাণ করছে। ইমো, হোয়াইটএ্যপ, টেলিগ্রামের বিকল্প হিসেবে Mevchat এ্যপস নির্মাণ করছে। এছাড়া এই কোম্পানির নিজস্ব নিউজ ভিত্তিক ওয়েবসাইটের নাম মেভবুক একটি আপকামিং স্যোসাল মিডিয়া এ্যপস। এই এ্যপসে আপনি ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কদিন, মেসেঞ্জার সহ বিভিন্ন এ্যপের মিশ্রিত ফ্লেভার পাবেন।
তাছাড়া রয়েছে গেমস, বিজনেস, ইভেনটস, মার্কেটপ্লেস, মুভি, ফোরাম, জব, অডিও, ভিডিও, লাইভ, পোল, আর্টিকেল শেয়ারের মত মজাদার ও গুরুত্বপূর্ণ অনেক ফিচার। মেভবুকের আবিষ্কারক ডা. তানভির কামাল বলেন, এখানে থাকবে না কোনো অসামাজিকতা, অশ্লীলতার বিষবাষ্প, থাকবে আপনার ডাটা সুরক্ষিত থাকার পূর্ণ নিশ্চয়তা।
এছাড়াও মেভবুকে থাকছে প্রো-মেম্বারশীপ সুবিধা, থাকছে ব্লগ সেকশন, নিজস্ব আর্টিকেল প্রকাশের সুযোগ। ডিজিটাল মার্কেটিং সহ দারুন সব ফিচার নিয়ে চালু হচ্ছে সম্পূর্ণ দেশীয় সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ৷ এই এ্যপসের মেসেঞ্জারের নাম Mevmanager.
এই দুটি এ্যপস আগামী পহেলা জানুয়ারি লঞ্চ করা হবে ইনশাআল্লাহ। তখন থেকেই মেভবুক পাওয়া যাবে Play Store সহ বিভিন্ন Apps Store। এছাড়া পহেলা জানুয়ারি রাত ৯ঃ৩০ মিনিটে মেভবুকের অফিসিয়াল পেইজ www.facebook.com/mevbook থেকে গ্রান্ড ওপেনিং সেরেমনি লাইভ করা হবে। সবাইকে দেখার আমন্ত্রণ রইল।
এছাড়া আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ধাপে ধাপে Mevmart, Mevjup,Mevchat,Mevask এর মত প্রোডাক্ট গুলোও লঞ্চ করা হবে ইনশাআল্লাহ।  মেভবুকের উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে ওয়েব ডিজাইনার, ডেভলপার, প্রোগ্রামার সকলেই বাংলাদেশী।
মুক্তবাজারের এই অর্থনীতিতে বাংলাদেশে হয়তো চীনের মত বিদেশি এ্যপস বন্ধ করা সম্ভব না। তবে বাংলাদেশীরা যদি তাদের তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মেভবুককে হাত ধরে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে তাহলে উদ্যোক্তাদের বিশ্বাস মেভবুকের হাত ধরেও সোনার বাংলা এগিয়ে যাবে সফলতার এক অনন্য উচ্চ শিখরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *