হরিণাকুন্ডুতে স্কুল ছাত্রীকে গণধর্ষণ, হুমকীতে দু’আসামীর নাম কাটা, ধর্ষকরা পলাতক

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, মোঃ জাহিদুর রহমান তারিক, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮ (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) : ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার সাবেক বিন্নি গ্রামে দশম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে পাশবিক করা হয়েছে। সে দরিবিন্নি হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। গত বুধবার মধ্যরাতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে একই গ্রামের নবিছদ্দির ছেলে মিল্টন, ঝান্টুর ছেলে মিন্টু, আনিছুর রহমানের ছেলে সেলিম ও ইমরুলের ছেলে রাজন পালাক্রমে পাশবিক নির্যাতন চালায়। এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডু থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই ধর্ষকরা গাঢাকা দিয়ে আছে। ফলে কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি। তবে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারে জোরদার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে গত বৃহস্পতিবার ধর্ষিতার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। রোববার বিকালে মামলার বাদী জিয়া ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এসে জানান, তারা হতদরিদ্র মানুষ। সরকারী ক্যানালের ধারে ঘর উঠিয়ে বেড়ার ঘরে বসবাস করেন। ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ১২টার দিকে ধর্ষক মিল্টন, মিন্টু, সেলিম ও রাজন ঘরে প্রবেশ করে তার মেয়েকে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর পালাক্রমে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে মেয়েকে বাড়িতে রেখে যায়। বিষয়টি প্রথমে তিনি এলাকার মেম্বর ওলিয়ার রহমানকে জানান। তারপর হরিণাকুন্ডু থানা পুলিশের দারস্থ হন। প্রথমে তিনি চার জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দিলেও মেয়ের জবানবন্দিতে দুই জনের নাম উল্লেখ করতে বলা হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে রহস্য দেখা দেয়। নির্যাতিত মেয়েটির সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে মিল্টন তারপর মিন্টু ও তৃতীয় দফায় সেলিম তাকে পাশবিক নির্যাতন করে। এরপর সে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজন ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে। অথচ মামলায় মিল্টন ও মিন্টুকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে পরিবারটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। চাপের কারণে ধর্ষিতা ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে দুই জনের নাম বলতে বাধ্য হয়েছে বলেও মেয়েটি জানায়। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু থানার ওসি কে এম শওকত হোসেন বলেন, ধর্ষনের কোন আলামত পাওয়া যায়নি এমন কথা হাসপাতাল থেকে তাকে বিশেষ একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন। ধর্ষনের ঘটনাটি ভুয়া মনে হলেও আমরা নারী নির্যাতন হিসেবে মামলা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে ওসি জানান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও হরিণাকুন্ডু থানার ওসি (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানান, বাদী দুই জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দিয়েছে। আদালতেও দুই জনের বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে ভিকটিম। তিনি আরো বলেন, ধর্ষনের সাথে আরো কেউ জড়িত থাকলে কারো রেহায় দেওয়া হবে না। কারণ বাদী ও তার পরিবার হতদরিদ্র ও খুবই অসহায়। তদন্তে চার জনের নাম আসলে চার জনকেই আসামী করা হবে তিনি জানান। এদিকে মানবাধিকার তদন্ত টিমের মিসেস মিনু ভিকটিমের সাথে কথা বলে সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন রাতেই আলামত নষ্ট করে ফেলেছে ভিকটিম। ফলে ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষনের আলামত নাও আসতে পারে। তবে ভার্জিন মেয়ে হিসেবে তাকে যে যৌনাচার করা হয়েছে এটা ডাক্তারী পরীক্ষায় আসলেও আসতে পারে। আলামত পাওয়া যাক আর না যাক মেয়েটির সাথে কথা বলে তাকে যে ধর্ষন করা হয়েছে এটা শতভাগ নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে মানবাধিকার কর্মী মিনু সাংবাদিকদের জানান। এদিকে ধর্ষনের আলামত ডাক্তারী পরীক্ষায় আসবে না এমন কথা প্রচার হওয়ার পর এলাকার একটি মহল ৫ লাখ টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে। তারা ধর্ষক মিল্টন ও মিন্টুর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের ধর্ষন মামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *