স্পার্ম ব্যাঙ্ক থেকে শুক্রাণু নিয়ে বিয়ে ছাড়াই সিঙ্গেল মা হলেন বাঙালী ডাক্তার

ডেস্ক রিপোর্ট, ০৭ এপ্রিল, ২০১৮  (বিডি ক্রাইম  নিউজ ২৪) :  বিয়ের বাধ্যবাধকতা ছাড়াই বৈজ্ঞানিক ভাবে স্বাধীন মাতৃত্ব সম্ভব । বন্ধ্যাত্বমোচন বিশেষজ্ঞ বাঙালী ডাক্তার শিউলি নিজেই মা হয়ে দেখালেন সবাইকে। অবশ্য এজন্য তার লড়াইও কম করতে হচ্ছে না।

বাঙালী ডাক্তার প্রমাণ করলেন , বাঙালীরাই পথ দেখাবে সচেতনতার ও বিজ্ঞানের নানা কীর্তির। তারা আলোর দিশা। অন্ধকার অচলায়তন ভেঙে শিখা চিরন্তন। ডা. শিউলি মুখোপাধ্যায় । নিজেকে নিয়ে গেলেন অনন্য উচ্চতায়।

কলকাতায় ‘একক মাতৃত্ব’ নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে দীর্ঘদিন কাজ করছেন তিনি। বন্ধ্যাত্ব নিরসন তার যেন উপাসনা। শত নারীর মুখে মাতৃত্বের হাসি ফোটানো। । বিভিন্ন নারীকে তিনি মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণের সুযোগও করে দেন সেবার ভিত্তিতে ন্যূনতম খরচে। এবার নিজেই সেই পথে হাঁটলেন।

ডা. শিউলি মুখোপাধ্যায় কলকাতার বাসিন্দা। দেড় বছর আগে তিনি একক মাতৃত্বের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেন। তার একাকিত্ব ঘোঁচাতে ও অন্যদের উৎসাহিত করতে তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। সেই ভাবনা থেকেই অবিবাহিত শিউলি এখন এক পুত্র সন্তানের মা।

ডা. শিউলি মুখোপাধ্যায়

 

৩৯ বছরের শিউলিদেবী ছেলের নাম রেখেছেন ‘রণ’। তবে ছেলের জন্মের পরেই এক তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে শিউলির। তিনি বলেন, ‘ছেলের জন্মের কাগজপত্রে বাবার নামের জায়গায় কী লিখবেন সেটা বুঝে উঠতে পারছিলেন না।’

তিনি জানান, শেষে আদালতে এফিডেভিট করে এবং সিঙ্গল মাদারের ক্ষেত্রে কলকাতা পৌরসভার দেয়া একটি শিশুর জন্মের কাগজপত্রের কপি ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কাগজপত্র পৌরসভায় জমা দেয়ার পরেই নিজের সন্তানের কাগজপত্র তৈরি হয়।

শিশু বয়স থেকেই রণকে সিঙ্গেল পেরেন্ট বা সিঙ্গল মাদারের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বোঝাতে চান শিউলি। শনিবার নিজের বেসরকারি হাসপাতালে বসে তিনি বলেন, ‘ছোট থেকেই ওকে বুঝিয়ে দিলে বড় হয়ে আর মনে কোনও সংশয় থাকবে না।’

প্রায় ১১ বছর আগে স্ত্রী-রোগ চিকিৎসক হিসাবে কাজ শুরু করার পরে তার হাতেই জন্ম হয়েছে অসংখ্য শিশুর। তবে সিজারিয়ান করে ছেলের জন্মের পরে প্রথম তাকে কোলে নেওয়ার অনুভূতি একেবারে অন্যরকম বলেই জানান তিনি।

শিউলিদেবী জানান, এমডি পড়ার সময় থেকেই বাড়ি থেকে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়া শুরু হয়। কিন্তু বিয়ে বিষয়টি ছিল তার অপছন্দের।

শিউলি বলেন, ‘বয়স বাড়ার সঙ্গে ক্রমশ একাকীত্বও বাড়ছিল। অল্পতেই রেগে যাচ্ছিলাম। তখনই এই সিদ্ধান্ত নিলাম।’

এর পরেই বাবা-মায়ের সঙ্গে আলোচনা করে পাকাপাকি ভাবে সিঙ্গেল পেরেন্ট হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি।

নিজের হাসপাতালের স্পার্ম ব্যাঙ্ক থেকে শুক্রাণু নিয়ে প্রবেশ করানো হয় তার শরীরে। হায়দরাবাদ ও মালদহের দুই মহিলাও তার চিকিৎসাতে সিঙ্গেল মাদার হতে চলেছেন।

খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *