সাতক্ষীরায় ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মূলহোতা ছাত্রলীগ নেতা

পুলিশ সুপারের প্রেসব্রিফিং : সাদিক ও তার সহযোগিদের নামে অস্ত্র আইনে মামলা

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি, হেলাল উদ্দীন, ০১ ডিসেম্বর, ২০১৯ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : সাতক্ষীরায় বিকাশ এজেন্টের ২৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মুল হোতা (মাস্টারমাইন্ড) সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক। ছিনতাই হওয়া ২৬ লাখ টাকার মধ্যে ২২ লাখ টাকাই সাদিকের কাছে পৌছে দেয় ছিনতাইকারিরা। এ ঘটনায় মূলত ৯ জন জড়িত ছিলো । তাদের মধ্যে ৭জকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার কৃতদের মধ্যে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২৯ নভেম্বর রাতে দুইজন নিহত হয়েছে। সাদিকসহ বাকি দুইজন এখনো পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। রোববার সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান তার সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন।

পুলিশ সুপার বলেন, টাকা ছিনতাই ঘটনার সাথে জড়িত মোট নয় জনের সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এরই মধ্যে দুই আসামি সাইফুল ইসলাম ও মামুনুর রহমান দ্বীপ পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। দু’জন আসামি আজিজুর ও সামী হাসান সোহান আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দীতে ছিসতাইয়ের ঘটনায় সাদিকের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে তিনি জানান।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, গত ৩১ অক্টোবর কালিগঞ্জ উপজেলার পাওখালি থেকে বিকাশের দুই এজেন্টকে গুলি করে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে ২৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় সাইফুল ও দ্বীপকে গ্রেফতার করা হলে তারাও নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে জানায় এই ছিনতাইয়ের মুল হোতা (মাস্টারমাইন্ড) সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক।

তারা জবানবন্দিতে আরো জানায়, ছিনতাই হওয়া ২৬ লাখ টাকার মধ্যে ২২ লাখ টাকা তাদের নেতা সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের হাতে তুলে দেয়। তিনি বলেন, সাইফুল ও দ্বীপ আটক হওয়ার পরে তাদের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র, গুলি, দুটি মোটর সাইকেল এবং নগদ টাকা জব্দ করা হয়। ২৯ নভেম্বর রাতে সাইফুল ও দ্বীপকে নিয়ে অভিযানে গেলে তাদের সহযোগিরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের সাথে ক্রসফায়ারে সাইফুল ও দ্বীপ নিহত হয়।

পুলিশ সুপার জানান, সাইফুল ও দ্বীপ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও সৈয়দ সাদিকুর রহমান পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সাদিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পৃথক একটি মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত তিনজনকে পুলিশ এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করছে জানিয়ে তাদেরকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়।

প্রেস ব্রিফিং-এ পুলিশ সুপার পরিস্কার ভাষায় বলেন, সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীরাসহ সব শ্রেণীর মানুষ নিরাপদে রাত-দিন ২৪ ঘন্টা চলাচল করবে। কেউ কোন ভাবে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কোন ছাড় দেয়া হবে না। তাই সে যতোবড় প্রভাবশালী হোক না কেনো।

প্রেস ব্রিফিং এ আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎমিশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহউদ্দিনসহ পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *