লেবু পাড়তে গিয়ে সেলস ম্যানেজারের মৃত্যু

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ০৭ নভেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর সদর উপজেলায় বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালে উঠে লেবু পাড়তে গিয়ে উপর থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পাওয়া আহত এলানকো বাংলাদেশ লিমিটেডের রিজিওনাল সেলস ম‍্যানেজারের মৃত্যু হয়েছে। নিহত মো. সোহরাব হোসেন (৫০) উপজেলার আবদুল্যাহপুর গ্রামের মৃত মো. শহীদ উল‍্যাহর ছেলে। তিনি এলানকো বাংলাদেশ লিমিটেডের রিজিওনাল সেলস ম‍্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

শনিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটালে আইসিইউতে চিকিৎসাধী অবস্থায় তিনি মারা যান। পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোহরাব হোসেন কর্মস্থল থেকে গত মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) ছুটি নিয়ে নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে আসেন। গত বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) বিকালে বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালের পাশের একটি লেবু গাছ থেকে লেবু পাড়তে উঠেন।

এসময় তিনি পা ছিঁটকে নিচে পড়ে ওয়ালের সাথে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হন। পরে বাড়ি ও আশপাশের লোকজন আহত সোহরাব হোসেনকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহরাবের মৃত্যু হয়।

মৃত্যুকালে সোহরাব হোসেন স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

আরও খবরঃ

**নোয়াখালীতে আ’লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির মৃত্যু**

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ০৭ নভেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর সদরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত এক ব্যক্তি ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার দু’দিন পর মারা গেছেন। নিহত আবদুল হক ওরপে হকসাব (৪৮) উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের চর করমুল্যা গ্রামের আমিন উল্যার ছেলে এবং স্থানীয় মান্নান গ্রুপের লোক ছিলেন । সুধারাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নবীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি আরো জানান, শনিবার (৭ নভেম্বর) সকাল ১০টায় দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবদুল হক মারা যায়। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। নিহতের ফুফাতো ভাই ও এওজবালিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান অভিযোগ করেন, বাবুল ডাক্তারের মদদে যুবদল ও শিবিরের ক্যাডাররা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উল্লেখ্য, এওজবালিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান এবং বাবুল ডাক্তারের সাথে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র ও  দ্বন্দের জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৯ টার দিকে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে দু’গ্রুপের মধ্যে স্থানীয় করমুল্যা বাজারে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫জন আহত হয়। সংঘর্ষে আবদুল হক গুরুত্বর আহত হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

**তুলে নিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা, ব্যর্থ হয়ে রাতভর শারিরীক নির্যাতন, সাবেক স্বামী আটক**

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ০৭ নভেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী থেকে তুলে নিয়ে তরুণীকে (১৯) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে রাতভর মারধরের ঘটনায় তার সাবেক স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় আরো তিন আসামি পলাতক রয়েছে। আটক সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পী (২৯) কবির হাট উপজেলার নবগ্রামের মো. ইউসুফের ছেলে।

শুক্রবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় আটক আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সাবেক স্বামীসহ ৪ জন জনকে আসামি করে ভুক্তভোগী সুধারাম থানায় মামলা করলে বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতেই সাবেক স্বামীকে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রাম থেকে আটক করে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিজ কর্মস্থল জেলা শহর মাইজদীর গ্রীণ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মাইজদীস্থ হরিনারায়পুরের বাসায় ফিরছিলেন শিক্ষানবিশ ওই নার্স। মাইজদী পেট্রোল পাম্পের সামনে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন এসময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা সামনে এসে দাঁড়ালে তিনি গন্তব্যে যাবার জন্য উঠে পড়েন। পরে ওই গাড়িটি একটু সামনে গেলে দুজন যাত্রী সামনের সিটে ওঠেন।

আর একটু সামনে গেলে তার সাবেক স্বামী ও আরও একজন ভিকটিমের দু পাশে উঠে বসেন। সিএনজিচালিত অটো রিকশায় ওঠার পর থেকেই তার ওপর শারিরিক নির্যাতন শুরু করে তার সাবেক স্বামী বাপ্পী ও তার সহযোগী রহিম (২৪)। চোখ-মুখ চেপে ধরে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে নিয়ে যায় তাকে। সিএনজি থেকে নামানোর পর বুঝতে পারে এটি তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পির বাড়ি।

ফাঁকা বাড়িতে সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ি কেউই নেই। সিএনজিতে মারতে মারতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। ঘরে ঢুকিয়েও বেদম মারধর করে তার সাবেক স্বামী। রাতে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় জলন্ত সিগারেটের আগুণে মুখমন্ডলে ছ্যাকা দেয়া ও অপর দ্ইুজনসহ ধর্ষণের চেষ্টা করে কিন্তু নির্যাতন সহ্য করে ধর্ষণ থেকে রক্ষা পান ওই তরুণী।

ভোরের দিকে অভিযুক্তরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে থাকে এ সুযোগে পালিয়ে মাইজদী চাচার বাসায় এসে আশ্রয় নেন তিনি। পরে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরে চাচার সহায়তায় মামলা দেন থানায়। স্বজনরা জানান, ছোট বেলায় বাবাকে হারান এই ভিকটিম, নতুন করে বিয়ের পিড়িতে বসেন মা-ও। অভিভাবক শূণ্য হয়ে নানির কাছেই বড় হন তিনি। নবগ্রামে নানির কাছে থাকা অবস্থায় বখাটে ইসমাইল হোসেন বাপ্পির নজরে পড়েন তিনি।

বাপ্পি অনেকটা জোর পূর্বক অপ্রাপ্ত বয়সেই তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে। কিন্তু বিয়ে করেও বাঁচতে পারেননি তিনি। প্রায় সময়ই ছুতোনাতা নিয়ে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হতো তাকে। মারধর করতেন শাশুড়ি, ননদ ও দেবর। গত দু মাস আগে তাদের ডিভোর্স হয়।

সুধারাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নবীর হোসেন জানান, সাবেক স্ত্রীর মামলার আলোকে অভিযুক্ত সাবেক স্বামীকে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

**ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নোয়াখালীতে মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ**

নোয়াখালী প্রতিনিধি, লূৎফুল হায়দার চৌধুরী, ০৭ নভেম্বর, ২০২০ (বিডি ক্রাইম নিউজ ২৪) : নোয়াখালী চাটখিল উপজেলার ০২ নং রামনারায়নপুর ইউনিয়নের ছোবহানপুর গ্রামে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আপন ছোট ভাই ও ভাতিজার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ভাতিজা পিয়াস (১৭) কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী অবিলম্বে এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, ছোহানপুর গ্রামের সাজুনি বাড়ির মৃত আবদুর রশিদের ছেলে আনোয়ারুল হকের সাথে তার বড় ভাই মমিনুল হকের সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ ও মামলা চলে আসছিল। সম্প্রতি সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মমিনুল হক তার মেয়েকে দিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার মিথ্যা নাটক সাজিয়ে গত শনিবার চাটখিল থানায় ধর্ষণ চেষ্টার মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

আনোয়ারুল হক অভিযোগ করে বলেন, তাকে ও তার ছেলেকে ফাঁসাতে তার ভাই মমিনুল হক নিজের মেয়েকে ভিকটিম বানিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার নাটক সাজান। উক্ত সাজানো মামলায় তার নিরাপরাধ ছেলে পিয়াস নোয়াখালী জেলা কারাগারে জেল খাটছে। তাছাড়া যাদের সাক্ষী দেয়া হয়েছে তারা ২০০৭ সালে তাকে, তার পরিবার ও তার শশুর বাড়ির লোকজনকে ধর্ষণ মামলা দিয়ে হয়রানি করে। মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত উক্ত মামলা খারিজ করে দেয়। এইভাবে তার ভাই দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করে আসছে। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ কোন রকম তদন্ত ছাড়াই মামলা গ্রহণ করে তাদের হয়রানি করছে। তাই এ ব্যাপারে তিনি পুলিশ সুপার মহোদয়ের দৃষ্টি কামনা করেছেন।

একই বাড়ির ফজলে আজম ও আমির হোসেনসহ অনেকে জানায়, দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে ঝগড়া-বিবাধ ও মামলা-মকদ্দমা চলে আসছিল। এরই জের ধরে সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পিয়াসকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ধর্ষণ বা ধর্ষণ চেষ্টা এ জাতীয় কোন ঘটনাই ঘটে নি। মমিনুল হক একজন মামলাবাজ। তাই মামলা সাজাতে এই নাটক সাজায়।

মমিনুল হকের পাশের ঘরের ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের স্ত্রী ফাতেমা বেগম জানায়, তাদের ঘরের সাথে আমাদের ঘর। ধর্ষণ চেষ্টা বা মারামারির কোন ঘটনা ঘটলে সবার আগে আমরা বলতে পারতাম। এই রকম কোন ঘটনাই ঘটেনি। পিয়াস অত্যন্ত ভালো ছেলে। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

এ বিষয়ে চাটখিল থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, মামলার আলোকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি আদালতে চলমান। তাই আদালতের মাধ্যমে তদন্তে প্রকৃত ঘটনার তথ্য বেরিয়ে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *